সাতক্ষীরায় কন্যা শিশু পাচারের অভিযোগে এক নারীর যাবজ্জীবন

সাতক্ষীরায় প্রথম শ্রেণীতে পড়া কন্যা শিশুকে পাচারের অভিযোগে এক নারীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। বুধবার দুপুরে সাতক্ষীরার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক হোসনে আরা আক্তার এ রায় দেন।
সাজাপ্রাপ্ত নারী আসামী হলেন, মোছাঃ আফরোজা ও ওরফে তাছলিমা খাতুন। তিনি শ্যামনগর উপজেলার পরানপুর গ্রামের নুর ইসলামের মেয়ে। বর্তমানে তারা কালিগঞ্জ উপজেলার রতনপুর গ্রামে বসবাস করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, পাচারের শিকার শিশু কন্যাটি শ্যামনগর উপজেলার ৮৬নং পরানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণীতে পড়তো। ২০০৩ সালের ৬ মার্চ সকাল ৮টার দিকে বাড়ি থেকে স্কুলে যায় সে। স্কুল শেষে সে আর বাড়ি ফেরেনি। সহপাঠী ময়না ও টুম্পার মাধ্যমে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারে যে স্কুল শেষে তাকে খালা পরিচয়ে এক নারী মাঠ থেকে ডেকে নিয়ে যায়। জানতে পেরে ইউপি চেয়ারম্যান জিএম আব্দুল করিম বিভিন্ন মসজিদে মাইকিং করে শিশুটির সন্ধান নেয়ার চেষ্টা করেন। রাত ১০টার দিকে স্থানীয় বৈশখালি গ্রামের লোকজন পাচারকারী আফরোজাকে আটক করলেও তার সঙ্গীরা পালিয়ে যায়। এ সময় উদ্ধার করা হয় ওই শিশুটিকে। এ ঘটনায় উদ্ধার হওয়া ওই শিশুর দাদা বারী সরদার বাদী হয়ে পাচারকারী আফরোজা খাতুন, রতনপুর গ্রামের বাবু, বাবলু ও আবু হান্নানের নাম উল্লেখ করে পরদিন শ্যামনগর থানায় একটি পাচারের মামলা দায়ের করেন। ২০০৩ সালের ৩০ জুন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্যামনগর থানার উপপরিদর্শক ফয়সাল জামান এজাহারভুক্ত আসামীদের নামে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
১০জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও মামলার নথি পর্যালোচনা শেষে বুধবার আসামী আফরোজা খাতুনের বিরুদ্ধে পাচারের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিচারক তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। একই সাথে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় এ মামলার অপর তিন আসামীকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়। তবে, এ রায়ের সময় পাচারকারী আসামী আফরোজা পলাতক ছিলেন।
রাষ্ট্রপক্ষে এ মামলাটি পরিচালনা করেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি অ্যাড. জহুরুল হায়দার বাবু।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)