সরকারি চাকরিতে থাকছে না কোটা: প্রধানমন্ত্রী

ডেস্ক রিপোর্ট:
সরকারি চাকরিতে কোনো কোটাই থাকছে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার বিকেলে জাতীয় সংসদে ঢাকার এমপি জাহাঙ্গীর কবির নানকের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ আমি করেছি। এই ব্যবস্থাকে ভালো কাজে ব্যবহার না করে তারা গুজব ছাড়াচ্ছে। মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে দেশে অস্থিতিশিল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চেয়েছিলো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটা গুজবের উপর ভিত্তি করে রাতে হলের গেট ভেঙে বেরিয়ে আসে মেয়েরা। মৃত্যুর সংবাদ দিয়ে এ মিথ্যা স্ট্যাটাস কে দিল? যদি একটা বড় ধরণের দুর্ঘটনা ঘটতো তাহলে এর দায়ভার কে নিতো?
তিনি বলেন, সবচে বড় কথা ন্যাক্কারজনক ঘটনা হলো ভিসির বাস ভবনে হামলা চালানো হয়। ভিসির বাসভবনে আক্রমণ ও ভাঙচুর হবে এটা কখনো ভাবিনি। ভাঙচুরের ছবি দেখে মনে হচ্ছে, ৭১ সালের ঘটনাকেও হার মানায়। হামলার সময় ভিসি সামনে আসলে তাকে আঘাত পর্যন্ত করতে গেছে। ঘরের সবকিছু ভাঙা হয়েছে। লুট হয়েছে। সিসি ক্যামেরা ধ্বংস করেছে। এমনকি টেপ রেকর্ডারও উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। যারা এ কাজ করেছে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হতে পারে না। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্ররা এরকম ধ্বংসাত্মক কাজ করবে কেন? ছাত্রীরা রাতে বাইরে বের হলো কেন? আমি সারা রাত ঘুমোতে পারিনি।
কোনো শিক্ষার্থী এ রকম করতে পারে না। এই হামলার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বের করে শাস্তি দেয়া হবে। বিচার হবে। আর লুটের মাল যারা নিয়েছে তাদের ও মালামল খুঁজে ফিরিয়ে দেয়ার দায়িত্ব ছাত্রদেরই। তাদেরকে খুঁজে বের করতে হবে। গোয়েন্দা বিভাগ এতে কাজ করছে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, রাস্তা-ঘাট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, হাসপাতাল, পরীক্ষা, ক্লাস সব বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অবরোধ চালাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। তারা কোটা সংস্কার চেয়েছে। যারা আন্দোলন করছে তারা আমার নাতি-পুতির মতো। আমরা যা করছি পর্যবেক্ষণ করে করছি। কোনটা করলে তাদের ভালো হয় আমরা তা বুঝি। তাদের ভালো-মন্দ দেখার দায়িত্ব আমাদের।
শেখ হাসিনা বলেন, ৩৩তম বিসিএসের মেধাবীরা ৭৭ দশমিক ৪০ শতাংশ নিয়োগ পেয়েছে। ৩৫তম বিসিএসে পেয়েছে ৬৭ দশমিক ৪৯ আর ৩৬তম বিসিএসে ৭০ দশমিক ৩৮ শতাংশ মেধা ভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছে। যেখানে কোটায় পাওয়া যাবে না সেখানে মেধা তালিকা থেকে নিয়োগ দেয়া হয় এটা আগেই বলা আছে, এটা নতুন কিছু নয়। সেই সুযোগও মেধাবীরা পাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোটা নিয়েই তো আন্দোলন? সংস্কারের জন্য আন্দোলন হবে তাই কোটাই বাতিল। এরপর আর কোনো ধরণের আন্দোলন নয়। এবার শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, কোটা সংস্কার নিয়ে এর আগে সোমবার ক্যাবিনেটে আলোচনা হয়েছে। এ নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে আন্দোলকারী দলের প্রতিনিধিদের কথা হয়েছে। সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। এটি ওই সময় তারা মেনে নিয়েছে। আমিও নির্দেশ দিয়েছিলাম, কোটাব্যবস্থা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে। তারপরও তারা আন্দোলন চালিয়েছে, এই আন্দেলন চালিয়ে যাওয়ার যৌক্তিকতা ছিল না।
বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা উনয়নশীল দেশের বিভিন্ন লক্ষ্য পূরণে নানা পদক্ষেপ নিয়েছি। এতে যত কার্যক্রম চালাচ্ছি শিক্ষা ব্যবস্থাকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। কারণ আমরা জানি, শিক্ষায় দারিদ্র বিমোচনের মূলমন্ত্র।
শিক্ষার উন্নয়নে জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেয়া হচ্ছে, প্রাথমিকে বই দেয়া হচ্ছে। কারণ দেশের ছেলে-মেয়েরা যেন মানুষ হতে পারে, দক্ষ হতে পারে ও দেশ পরিচালনা করতে পারে।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)