শ্যামনগর সাব-রেজিস্টার,শতাধিক দলিল রেখে অফিস ছেড়ে পালালো

 শ্যামনগর উপজেলা সাব-রেজিস্টার বদলী জনিত কারণে সাতক্ষীরার কলারোয়ার অফিসার মোঃ সাইদুর রহমান খণ্ড কালীন দায়িত্ব নিয়ে শ্যামনগরে যোগদান করেন,প্রতি সপ্তাহের দুই দিন বুধবার ও বৃহস্পতিবার অফিস করার লক্ষে গত বুধবার প্রথম অফিস শুরু করেন,প্রথম দিনে তিনি দলিল লেখকদের অফিসের কর্মচারীদের উপর প্রভাব বিস্তর করার লক্ষে একগুয়েমি মনোভাবের মাধ্যমে দুই টি দলিল রেজিস্ট্রি করে সম্মুদয় দলিল ফেরত দেন, প্রায় শতাধিক দলিল রেজিস্ট্রি না করে নানা অজুহাতে ফেরত দেন, একারণে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্তর থেকে আসা শতশত নারী পুরুষ দাতা, গ্রহীতা সহ সনাক্তকারী ও স্বাক্ষীগন বেলা শেষে সন্ধ্যার পর প্রচণ্ড বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে বাড়ীতে চলে যায়, সে কারণে ভুক্তোভুক্তিরা দারুণ ভাবে হয়রানীর শিকার হয়,একই বৃহস্পতিবারে নানা অজুহাত খাড়া করে একের পর এক দলিল রেজিস্ট্রি না করে টেবিল থেকে দলিল ফেরত দিতে থাকে। এক পর্যায় দুরদুরন্ত থেকে দাতা, গ্রহীতা হিসাবে আসা শতশত মানুষ উত্তেজিত হয়ে পড়ে, সাধারণ জনগণের ও সাথে ও সাব – রেজিস্টার সাইদুর রহমান খারাপ আচরণ করতে থাকে, পরিবেশ পরিস্থিতি মারমুখী হয়ে উঠলে সাধারণ জনগণকে শ্যামনগর দলিল লেখক সমিতির সভাপতি এম কামরুজ্জামান সহ একাধিক দলিল লেখক জোট বদ্ধ ভাবে দাতা গ্রহীতা হিসাবে আসা সাধারণ জনগণকে বুঝিয়ে শান্ত করেন,এ সময় দাতা গ্রহীতাদের পক্ষে এখানকার পরিবেশ, পরিস্থিতি ও এ দুদিনে তারা ব্যাপক হয়রানী হয়েছেন, এমন কথা বলতেই খণ্ড কালীন কলারোয়া থেকে দায়িত্বে আসা সাব- রেজিস্টার মোঃ সাইদুর রহমান রাগান্বিত হয়ে এবার বে-পরোয়া ভাবে দলিল লেখকদের সাথে খারাপ আচরণ করতে থাকে, এমনকি তিনি লাইসেন্স বাতিল সহ দলিল লেখকদের দেখে নেয়ার হুমকি দিতে থাকেন,এ সময় আকর্ষিক ভাবে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে টেবিলে রাখা শত শত দলিল ছুড়ে দিয়ে রেজিস্ট্রি না করে দ্রুত অফিস ছেড়ে পালিয়ে যান, একারণে শ্যামনগরের শতশত মানুষ ব্যাপক হয়রানীর শিকার হয়েছেন,এদিনে সরকার প্রায় অর্ধকোটি টাকার রাজস্ব থেকে বন্ঞিত হয়েছে,নিজের প্রভাব বিস্তর করতে সাব- রেজিস্টারের এমন আচারে কেন সাধারণ মানুষ হয়রানীর শিকার হবেন ও সরকার কেন লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব থেকে বন্ঞিত হবেন,এমন অভিযোগ তুলে শ্যামনগরের সচেতন মহল, জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকবৃন্দ, দলিল লেখকজন তদন্ত পূর্বক বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। ভুক্তোভুক্তি রিজিয়া খাতুন, কাশেম গাজী, ছকিনা বেগম, রবিউল ইসলাম, সোহরাব গাজী, ইদ্রিস আলী বলেন,জমি রেজিস্ট্রি করার জন্য দুই দিন ধরে সাব- রেজিস্ট্রি অফিসে ধর্না দিচ্ছি কিন্ত কাগজপত্র সবই ঠিক থাকার সত্বে ও অফিসার আমাদের দলিল রেজিস্ট্রি করলেন না, দলিলগুলো পড়েও দেখলেন না, বিষয়টি ওনার সাথে আমরা কথা বলার চেষ্টা করতে গেলে তিনি আমাদেরকে অফিস থেকে তাড়িয়ে দেন, এসময় তিনি আমার ইচ্ছা হলে রেজিস্ট্রি করবো, না হলে করবো না, আপনারা যেখানে ইচ্ছা সেখানে চলে যান।শ্যামনগরের সিনিয়র আইনজীবী এড মুনসুর আলম বলেন, একজন সরকারী কর্মকর্তার এমন আচরণ সত্যি দুঃখ জনক, নিজের প্রভাব বিস্তর সাধারণ জনগণকে হয়রানী আর সরকারকে রাজস্ব বন্ঞিত তিনি করতে পারেন না, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত, উপজেলার ইশ্বরীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের ইউনিয়ন সভাপতি, উপজেলার চেয়ারম্যান সমিতির সাধারণ সম্পাদক এড মোঃ শোকর আলী বলেন সঠিক কাগজপত্র থাকার দলিল রেজিস্ট্রি না করে ফেরত দিলেন সাব- রেজিস্টার সাইদুর রহমান, তিনি একটি দলিল রেজিস্ট্রির বিষয়ে আমি নিজেই অফিসে যেয়ে অফিসার সঠিক কাগজপত্র আছে কি না দেখে শুনে বুঝে রেজিস্ট্রি করার অনুরোধ করলাম কিন্ত তিনি দলিল না ছুঁয়ে টেবিল থেকে সরিয়ে দিলেন, তিনি বলেন একজন সরকারী কর্মকর্তার আচরণ এমন হতে পারে এটা ভাবা অসম্ভব, তিনি বর্তমান সরকার জনবান্ধব সরকার, সাধারণ মানুষকে সেবা দিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বারবার সরকারী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিচ্ছেন অথচ একজন ঘুষখোর সাব- রেজিস্টার ঘুষের টাকা বাড়াতে প্রথমে এসেই প্রভাব বিস্তর করার লক্ষে এমন আচরণ করলে যেটি খুবই দুঃখজনক, তিনি আমরা চেয়ারম্যান উপজেলা মাসিক সম্ময় কমিটির মিটিংয়ে তার বিরুদ্ধে রেজুলেশন করে আইনগত ব্যবস্থার লক্ষে কর্তৃপক্ষকে জানাবো। শ্যামনগর দলিল লেখক সমিতির সভাপতি এম কামরুজ্জামান বলেন,আমরা দলিল লেখকগন ঠাণ্ডা মাথায় পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করেছে, যে ভাবে সাধারণ জনগণ ও জনপ্রতিনিধি সহ সচেতন মহল উত্তেজিত হয়ে পড়েছিল, এখানে যদি আমরা দলিল লেখকগন এ পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারতাম, তাহলে রক্তক্ষয়ী পরিবেশ সৃষ্টি হতো, দলিলগন অফিসারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে কোন রকমে পরিবেশ শান্ত করে।তবে এমন পরিবেশ কারোর কাম্য নয় বলে তিনি দাবী করেন।
বিশিষ্ট সমাজসেবক ও সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বলেন, একজন সরকারী কর্মকর্তার কোন একতিয়ার নেই শতশত জনগণকে হয়রানী করা ও নিজের প্রভাব বিস্তর করার লক্ষে সরকারকে লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব থেকে বন্ঞিত করার, তিনি বলেন এখানে সাধারণ জনগণ আর সরকার ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সুতরাং তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থার লক্ষে হাইকোর্টে রিট করা হবে এবং দুদোক বরাবর শতশত মানুষের গন স্বাক্ষর নিয়ে অভিযোগ করা হবে।
এবিষয় সাব- রেজিস্টার সাইদুর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি মোবাইল ফোন ধরেন নি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)