শিশু ধর্ষণের বিচার করলো সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ থানার ওসি

বিশেষ প্রতিনিধি:
৬ বছরের কন্যাশিশুকে ধর্ষণ করে আাপন চাচাত ভাই। রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটিকে নিয়ে যাওয়া হয় সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ থানাতে। পরবর্তীতে হাসপাতালে নিয়ে দেওয়া হয় চিকিৎসা । পরে পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ করলে ওই দিন রাতেই ধর্ষককে আটক করে পুলিশ। কিন্তু পরবর্তীতে এক লক্ষ টাকায় দফারফা করে ছেড়ে দেয়া হয় ধর্ষককে।
শিশুর পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা ইউনিয়নের পূর্বপাইকাড়া গ্রামের বাসিন্দা সাহেব আলী। তার ৬ বছরের কন্যাশিশু পার্শ্ববর্তী তারালী মাদ্রাসার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রী। গত ২০ ডিসেম্বর বেলা ২টার দিকে বাড়ীতে কেউ না থাকার সুযোগে শিশুটিকে ঘরের মধ্যে ডেকে নিয়ে যায় চাচাতো ভাই মনিরুল কারিগর এবং শিশুকে ধর্ষণ করে। এ সময় শিশুর মা তহমিনা খাতুন দেখতে পেলে রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটিকে ফেলে রেখে পালিয়ে যায় মনিরুল।
পরবর্তীতে ওই দিনই কালিগঞ্জ থানায় অভিযোগ করে শিশুটির পরিবার। তাৎক্ষণিক ওসি সুবীর দত্তের নির্দেশে সহকারী উপ-পরিদর্শক মামুনুর রহমান ধর্ষক মনিরুলকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর ১ লক্ষ টাকা চুক্তিতে আসামীকে থানা থেকে ছেড়ে দেয়। শিশুর পরিবার আসামীদের ছেড়ে দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে থানায় প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে তাদের বের করে দেয়।
শিশুর বাবা সাহেব আলী কারিগর বলেন, মেয়েকে খুজে পাচ্ছিলাম না। পরবর্তীতে একটা ঘরের মধ্যে পাওয়া যায়। এ সময় ছেলেটি পালিয়ে যায়। এরপর মেয়েটিকে নিয়ে থানায় গিয়েছিলাম। তারা আসামীকে আটকও করেছিলো। তবে পরে তাকে ছেড়ে দেয়।
স্থানীয় সমাজসেবী ফাতিমা ইসলাম রিক্তা বলেন, এই শিশুধর্ষণকে কেন্দ্র করে কালিগঞ্জ থানা কর্তৃপক্ষ যে অর্থ বানিজ্যের চেষ্টা চালিয়েছে তার ধিক্কার জানায় এবং এই শিশু পরিবারটি যেন সুবিচার পায়।
কালিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ ওহিদুজ্জামান বলেন, আমার কাছে এসেছিলো। থানায় ৫০ হাজার আর মেয়েটির পরিবারের ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার চুক্তি হয় বলে জেনেছি। সে অনুযায়ী থানায় ৫০ হাজার টাকা দিয়ে আসামীকে ছাড়িয়ে নেয় কিন্ত পরিবার কোন টাকা পায়নি।
১৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার বিকালে কালিগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) রাজীব হোসেন বলেন,  কেউ ধর্ষিত হয়েছে এমন কোন বিষয় আমাদের জানা নেই। তাছাড়া থানায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে বিষয়টি জানাজানি হলে  ওই দিন( ১৬ জানুয়ারি ) রাতে ধর্ষণের মামলা রেকর্ড হয়েছে বলে নিশ্চিত করে কালিগঞ্জ থানার এস আই মামুনুর রহমান বলেন , এ ব্যাপারে ১৬ জানুয়ারি একটি মামলা হয়েছে। মামলা নং ৯। ১৭ তারিখে আসামিকে আদালতের মাধ্যমে  জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
কালিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবীর দত্ত বলেন, এতদিন কেউ এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ দেয়নি। ১৬ জানুয়ারি অভিযোগ পেয়েই আসামীকে আটক করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)