গুরুত্ব থাকলেও সংস্কার হয়নি সাতক্ষীরার শিশু একাডেমীর ভবন

নাজমুল শাহাদাৎ(জাকির):
শিশু একাডেমীর গুরুত্ব থাকলেও সংস্কার হয়নি সাতক্ষীরার শিশু একাডেমীর ভবন। বাংলাদেশ শিশু একাডেমী মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের অন্তভূক্ত একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠানটি একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান, যে প্রতিষ্ঠানে সরাসরি কোমলমতি শিশুদের শিক্ষা ও সংস্কৃতি সেবা দিয়ে থাকে। শিশু বিকাশ শ্রেনী, প্রাক প্রাথমিক শ্রেণিতে ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাথমিক শিক্ষার ধাপ গুলো অতিক্রম করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির যোগ্য করে তোলে এই প্রতিষ্ঠানটি। শিশুর ভিতর লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভা গুলো বাইরে এনে সাংস্কৃতিক প্রশিক্ষণ বিভাগ এর মাধ্যমে শিশুদের কে গড়ে তোলে এই প্রতিষ্ঠানটি। প্রত্যেক জেলা শহরে একটি করে ও বাংলাদেশের ৬ টি উপজেলায় মাত্র ১ টি করে অফিস নিয়ে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর এই প্রতিষ্ঠানটি সারা দেশে চলছে। সাতক্ষীরা জেলায় ও অন্যান্য জেলা সদরের মত বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর একটি জেলা অফিস রয়েছে। এই জেলা অফিসের প্রধান হলেন একজন প্রথম শ্রেণির গেজেটেড অফিসার। জেলা শিশু একাডেমীর অন্য একটি বিভাগ হলো লাইব্রেরী ও যাদুঘর বিভাগ, সাংস্কৃতিক প্রশিক্ষণ বিভাগ। লাইব্রেরী বিভাগে শিশুরা ২০ টাকার ফরম পূরণ করে সদস্য হতে পারেন। সাতক্ষীরা জেলা শিশু একাডেমী সদর উপজেলা পরিষদ ক্যাম্পাসের ভিতরে অবস্থিত। অফিসে জেলা কর্মকর্তার ১ টি কক্ষ, লাইব্রেরী ও যাদু ঘরের জন্য ১ টি কক্ষ ও একটি ছোট মিলনায়তন ছাড়া আর কোন কক্ষ নেই।এই মিলনায়তনে পাটিশন করে অফিসের হিসাব বিভাগের কাজকর্ম পরিচালিত হচ্ছে। একটি অফিসে ৩ টি কক্ষের ভিতরে যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা অত্যান্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।ইতি মধ্যে শিশু দের জন্য এই ভবন টি অত্যান্ত অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর সাতক্ষীরা জেলার শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা  শেখ আবু জাফর মোঃ আসিফ ইকবাল এঁর কাছে  ‘ভবনের এই অবস্থা কেন? যে কোন সময় তো দূর্ঘটনা ঘটতে পারে! জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, ২০০৭ সালে ভবন টি উদ্বোধন করা হয়। এর পর শিশু একাডেমীর কার্যক্রম ঐ ভবনেই হতে থাকে। সর্ব প্রথম ভবন টি সম্প্রসারণ ও সংস্কার করার প্রয়োজনীতা অনুধাবন করে তৎকালীন জেলা প্রশাসক জনাব মোঃ আবদুস সামাদ স্মারক নং জেপ্রসাত/সাধারন/২৪-ন-৮/১০-৪৮১ তারিখ : ০২/০৬/২০১১ খ্রিস্টাব্দ মোতাবেক সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় বরাবর জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তার ভবন সংস্কার করার জন্য পত্র প্রেরণ করেন।
এরপর জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা ভবন সংস্কার করার জন্য স্মারন নং নিঃভঃ১৪৫/বাশিএ/সাত/২০০৫/২০৯১ (১৮ই জানুয়ারি ২০১৫) এ মোতাবেক জেলা প্রশাসক বরাবর ভবন সংস্কারের জন্য আবেদন করেন। এছাড়াও তৎকালীন জেলা প্রশাসক জনাব নাজমুল আহসান স্মারক নং ৩২.৪৪.৮৭০০.০১০.৫৫.০০১.১৫-৬৬৪ (২৯শে এপ্রিল ২০১৫) মোতাবেক শিশু একাডেমী সংস্কার করার জন্য আর্থিক বরাদ্ধ চেয়ে পরিচালক বাংলাদেশ শিশু একাডেমী বরাবর পত্র প্রেরণ করেন। জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তার স্মারক নং ২০৯০ (১৮ই জানুয়ারি ২০১৫) নং স্মারক মোতাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সদরের নিকট ভবন সংস্কার ও বর্ধিত করার অনুমতি চান। এরই প্রেক্ষিতে সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদের ২ই ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সালে এ উপজেলা পরিষদের মাসিক সাধারন সভার কার্য বিবরনীর ৯ নং অনুচ্ছেদ এর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভবন বর্ধিত করনের অনুমতি প্রদান করেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলা পরিষদ। এতো কিছুর পর ও জেলা শিশু একাডেমী ভবনের সংস্কারের বা বর্ধনের কোন কাজই হয়নি। সাতক্ষীরা জেলা শিশু একাডেমীর ছাত্র/ছাত্রীদের অভিভাবক দের সাথে কথা হলে তারাও ভবনের খারাপ অবস্থার কথা জানান। তার আরো বলেন, বর্তমান সরকার উন্নয়নের সরকার, এই সরকারের আমলে দেশের এমন কোন সেক্টর নেই যেখানে উন্নতির ছোয়া লাগেনি, কিন্তু সাতক্ষীরা জেলা শিশু একাডেমী তার ব্যতিক্রম। আমরা সাতক্ষীরা বাসী চাই আমাদের শিশুদের প্রানের প্রতিষ্ঠান শিশু একাডেমি ভবনটির উন্নতিও প্রশিক্ষণ বিভাগে আধুনিক কি-বোড,ড্রাম,গীটার সহ আধুনিক সরঞ্জাম যুক্ত এক সুপরিসর শিশু একাডেমী চাই।
বিষয়টি যথাযথ কতৃপক্ষের মাধ্যমে সাতক্ষীরার কোমলমতি শিশুদের মেধা বিকাশের স্বার্থে ভবনটি’র সরজ্ঞাম ও ডিজিটাল সুবিধা প্রদান করে সাতক্ষীরা জেলা শিশু একাডেমী কে পরিপূর্ন সেবা দানে সক্ষম করার সাতক্ষীরা জেলার সর্ব স্তরের জনসাধারণ দাবি জানিয়েছেন।’

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)