শিল্পীরাও বোধহয় এত সুন্দর করে ম্যাচের দৃশ্যপট আঁকতে পারতেন না-জার্মানি

শিল্পীরাও বোধহয় এত সুন্দর করে ম্যাচের দৃশ্যপট আঁকতে পারতেন না। ম্যাচের ৯৪ মিনিটের মাথায় ডি বক্সের বাইরে ফ্রি কিক পায় জার্মানি। তখন খেলার ফলাফল ১-১। ড্র করলে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের সম্ভাবনা অনেকটাই শেষ হতো জার্মানির। অন্যদিকে দ্বিতীয় রাউন্ডে ওঠা অনেকটাই নিশ্চিত হতো সুইডেনের। কিন্তু সব সমীকরণকে একটি শটেই পাল্টে দিলেন টনি ক্রুস। তার দুর্দান্ত ফ্রি কিকে সুইডেনকে শেষ ৩০সেকেন্ড সময়ের গোলে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্বকাপে টিকে রইল জার্মানি।

জিতলেই টিকে রইবে বিশ্বকাপ স্বপ্ন, ড্র করলে সুতোয় ঝুলবে আর হারলে বিদায়। এমন সমীকরণকে সামনে রেখে সোচিতে খেলতে নামে জার্মানি। প্রথমবারের মতো কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে মেসুত ওজিলকে বাদ দিয়ে একাদশ সাজান জোয়াকিম লো। ম্যাচের শুরু থেকেই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে খেলতে থাকে জার্মানি। ৭ মিনিটে ড্রাক্সলারের শট সুইডিশ রক্ষণভাগের খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে বাইরে চলে যায়। ১২ মিনিটে ম্যাচের সব থেকে সহজ সুযোগটি পায় সুইডেন। নয়্যারকে একা পেয়ে বার্গ গোল করতে ব্যর্থ হন বোয়াটেংয়ের অসাধারণ ট্যাকেলে।

৩৯ মিনিটে সমতায় ফেরার সুযোগ পেয়েছিল জার্মানি। গুন্দোগানের দূরপাল্লার শট রুখে দেন সুইডিশ গোলরক্ষক, রিবাউন্ডে মুলারের শট গোলবারের ইঞ্চি দূরত্ব বাইরে দিয়ে চলে যায়। প্রথমার্ধের একদম অন্তিম মুহূর্তে লারসনের হেড ডান পাশে ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন নয়্যার। এক গোলে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় জার্মানি।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ম্যাচে ফিরে জোয়াকিম লোর শিষ্যরা। ৪৮ মিনিটে দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হিসেবে মাঠে নামা মারিও গোমের বাড়ানো বলে বা পায়ের আলতো ছোঁয়ায় বিশ্বকাপে জার্মানির হয়ে প্রথম গোলটি করেন মার্ক রয়েস। ৫৬ মিনিটে আরো একবার জার্মানির বাধা হয়ে দাঁড়ান অলসেন। হেক্টরের শট রুখে দেন এই সুইডিশ গোলরক্ষক।

খেলা যত গড়াচ্ছে ততই জার্মানির বিশ্বকাপ স্বপ্ন ফিকে হবার পথে। ৭২ মিনিটে টিমো ভেরনারের শটও পরাস্ত হয় অলসেনের কাছে। ৭৬ মিনিটে ব্যবধান বাড়ানর সুযোগ পেয়েছিল সুইডেন। কিন্তু ডুরমাজের কর্নার কিক থেকে অগাস্টিনসনের পা থেকে ফর্সবার্গের কাছে গেলে তার শটকে রুখে দেন নয়্যার।

৮১ মিনিটে ডান পাশ থেকে কিমিখের মাটি কামড়ানো ক্রসে ডি বক্সের ভেতর ফাঁকা জায়গায় পেয়েও গোলবারের উপরে শট মারেন ভেরনার। ৮২ মিনিটে ম্যাচে বোয়াটেং দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের মাধ্যমে লাল কার্ড পেলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় জার্মানি। ৮৮ মিনিটে মারিও গোমেজের হেডও প্রতিহত হয় অলসেনের কাছে। অতিরিক্ত সময়ের দুই মিনিটের মাথায় ব্রান্ডটের দূরপাল্লার বা পায়ের শট গোলবারে লেগে ফিরে আসলেও আশাহত হয় জার্মানরা।

কিন্তু তখনও চিত্রনাট্যের অনেকটা বাকি ছিল। ৯৫ মিনিটে ডি বক্সের সামান্য বাইরে ফ্রি কিক পায় জার্মানি। সেই ফ্রি কিক থেকে দুর্দান্ত গোল করে জার্মানিকে অবিস্মরণীয় এক জয় এনে দেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা টনি ক্রুস। ২-১ গোলের জয়ে বিশ্বকাপের পরের রাউন্ডে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে জার্মানি। পরের ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়াকে হারাতে পারলেই দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠে যাবে তারা। অন্যদিকে সুইডেনের শেষ ম্যাচে জিততেই হবে মেক্সিকোর বিপক্ষে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)