লন্ডনের পথে প্রধানমন্ত্রী
নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৩তম অধিবেশনে যোগ দিতে লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বাংলাদেশ বিমানের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট শুক্রবার সকালে ঢাকা ছেড়ে যায়। লন্ডনের স্থানীয় সময় বিকেল ৩টা ৫৫ মিনিটে বিমানটি হিথরো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার নাজমুল কাওনাইন প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাবেন। ব্রিটিশ রাজধানীতে দু’দিনের যাত্রাবিরতির পর প্রধানমন্ত্রী রোববার সকালে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটযোগে নিউইয়র্কের পথে লন্ডন ত্যাগ করবেন।
বিমানটি ঐদিনই স্থানীয় সময় ১টা ৪০ মিনিটে নিউইয়র্ক লিবার্টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, নিউ জার্সিতে অবতরণের কথা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মাদ জিয়াউদ্দিন এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানাবেন।
যুক্তরাষ্ট্র সফরের প্রথম দিন সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের হোটেল হিলটনে প্রবাসী বাংলাদেশীদের দেয়া এক সংবর্ধনায় যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। সফরের দ্বিতীয় দিন জাতিসংঘ সদর দফতরে জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী মিশনের আয়োজনে অনুষ্ঠেয় ‘গ্লোবাল কল টু অ্যাকশন অন ড্রাগ প্রবলেম’ শীর্ষক হাই লেভেল ইভেন্টে যোগদান করবেন তিনি। পরে জাতিসংঘ সদর দফতরে ইউএন হাইকমিশনার ফর রিফিউজিস আয়োজিত ‘গ্লোবাল কমপ্যাক্ট অন রিফিউজিস: এ মডেল ফর গ্রেটার সলিডারিটি অ্যান্ড কো-অপারেশন’ শীর্ষক উচ্চপর্যায়ের একটি ইভেন্টে অংশগ্রহণ করবেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সদর দফতরের দ্বিপক্ষীয় সম্মেলন কক্ষে নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুটের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকেও মিলিত হবেন। এছাড়া হোটেল গ্র্যান্ড হায়াতে যুক্তরাষ্ট্র চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকেও অংশ নেবেন। বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সাধারণ পরিষদের সম্মেলন কক্ষে নেলসন ম্যান্ডেলা পিস সামিটেও বক্তৃতা প্রদানের কথা রয়েছে।
শেখ হাসিনা ২৫ সেপ্টেম্বর সাইবার নিরাপত্তা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা-বিষয়ক হাই লেভেল ইভেন্টে অংশগ্রহণ করবেন। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন ও জাতিসংঘের নিরস্ত্রীকরণ-বিষয়ক কার্যালয় (ইউএনওডিএ) যৌথভাবে জাতিসংঘ সদর দফতরের ৩ নং কক্ষে এটির আয়োজন করবে। ওইদিন সাধারণ পরিষদ ভবনের নর্থ ডেলিগেট লাউঞ্জে জাতিসংঘের মহাসচিব আয়োজিত মধ্যাহ্ন ভোজে যোগদান করবেন প্রধানমন্ত্রী। বিকেলে জাতিসংঘ মহাসচিবের হাই লেভেল ইভেন্ট ‘অ্যাকশন ফর পিস কিপিং’-এ (এ ফোর পি) অংশগ্রহণ করবেন তিনি।
২৬ সেপ্টেম্বর ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর, ইউএন হাইকমিশনার ফর রিফিউজিস (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্রান্দি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা নীতি-বিষয়ক উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি ফেদেরিকা মঘেরিনি পৃথকভাবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। একই দিন এস্তোনিয়ার প্রেসিডেন্ট কেরস্তি কালিয়ুলাইদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী।
২৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী সৌদি আরবের স্থায়ী মিশন এবং ওআইসি সচিবালয়ের যৌথ উদ্যোগে জাতিসংঘ সদর দফতরের ১২ নং কক্ষে অনুষ্ঠেয় সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কিত হাই লেভেল সাইড ইভেন্টে অংশগ্রহণ করবেন। একই দিনে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ মহাসচিব এন্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে জাতিসংঘ সদর দফতরে তার সভাকক্ষে বৈঠক করবেন। যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট মাইক পম্পেওরও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে।
সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ প্রদানের পরদিন ২৮ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের নিউইয়র্কের কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে অংশগ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী। ওইদিন বিকেলে নিউইয়র্কের জন এফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইতিহাদ এয়ারওয়েজের একটি বিমানযোগে ঢাকার উদ্দেশে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগ করবেন শেখ হাসিনা।
আগামী ১ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টায় প্রধানমন্ত্রীর দেশের ফেরার কথা রয়েছে।