মেসির জাদুকরি ফ্রি-কিকে বার্সার ৬ হাজার

এত এত আক্রমণ, খেলার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ শেষ। তবু গোল পাচ্ছে না বার্সেলোনা…।

সুযোগ সব হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। ন্যু ক্যাম্পে হতাশার চাদরে মুড়ে গেছে বার্সা শিবির। সেই হতাশার মেঘ অবশ্য কান্না হয়ে ঝরতে দেননি মেসি। ৬৪তম মিনিটে আর্জেন্টাইন জাদুকরের অসাধারণ ফ্রি-কিক। লা লিগায় বার্সেলোনা দেখা পায় ৬০০০তম গোলের। এরপর যোগ হওয়া সময়ে (৯২তম মিনিট) সুয়ারেজের ক্রস থেকে মেসির ফিনিশিং ছিল মেসির মতোই। এই ফাঁকে ৮৩তম মিনিটে কুতিনহো দুর্দান্ত গোল করেন। আলাভেসের বিপক্ষে ৩-০ গোলের ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বার্সেলোনা।

প্রথমার্ধে বার্সেলোনার একের পর এক আক্রমণ আর মেসি-সুয়ারেজ-ডেম্বেলেদের গোলমুখে শট আটকাতেই সময় পার হয়ে যায় আলাভেসের খেলোয়াড়দের। ৮০ শতাংশ সময়ই বার্সা খেলোয়াড়দের পায়ে বল থাকে। স্বাগতিকেরা গোলমুখে শট নেন ১১টি। অবশ্য এর বেশির ভাগই বেপথু ছিল। মাত্র ২টি শট লক্ষ্যে রাখতে পেরেছে বার্সার খেলোয়াড়েরা। এই যেমন, ম্যাচের তৃতীয় মিনিটের মাথাতেই আলাভেসের গোলমুখে শট নেন মেসি। সেটি গোলপোস্টের পাশ দিয়ে চলে যায়। অল্পের জন্য রক্ষা পায় আলাভেস। ষষ্ঠ মিনিটে আবারও আলাভেসের গোলপোস্টে শট নেন মেসি। এবার বলের ঠিকানা সাইড নেট। এরপর বেশ কয়েকবার ভালো সুযোগ পেয়েও বল জালে জড়াতে পারেননি মেসি, সুয়ারেজ কিংবা ডেম্বেলে।

৩১তম মিনিটে গোলরক্ষককে একা পেয়েও সুযোগ হাতছাড়া করেন সুয়ারেজ। ৩৮তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে সুবিধাজনক জায়গায় ফ্রি-কিক পায় বার্সেলোনা। মেসির ফ্রি-কিক গোলবারে গিয়ে লাগে। ফের গোলবঞ্চিত বার্সা। পরের মিনিটেই মেসির পাস থেকে ডি-বক্সে বল পান ডেম্বেলে। ডেম্বেলের শট আটকে দিয়ে দলকে নিশ্চিত গোলের হাত থেকে বাঁচান আলাভেসের গোলরক্ষক। মিনিট দু-এক পর সুযোগ হাতছাড়া করেন সুয়ারেজ।

দ্বিতীয়ার্ধে নেমেই গোলের সুযোগ তৈরি করেন ডেম্বেলে। কিন্তু বল জালে জড়াতে ব্যর্থ হন আরেকবার। ৫৪তম মিনিটে মেসির শট আটকে দিয়ে দলকে ফের রক্ষা করেন আলাভেস গোলরক্ষক। একের পর এক মিস বার্সা শিবিরে হতাশা তৈরি করে। খানিকটা চিন্তায় পড়ে যান বার্সেলোনা কোচ আর্নেস্তো ভালভার্দে! অবশেষে হাঁফছেড়ে বাঁচেন ভালভার্দে। ৬৪তম মিনিট— আলাভেসের ডি-বক্সের বাইরে ফাউলের শিকার হন মেসি। মেসির গড়ানো ফ্রি-কিক থেকে গোলের গিট খোলে বার্সেলোনা। আলাভেস রক্ষণের খেলোয়াড়েরা মেসির সামনে দেয়াল হয়ে দাঁড়ায়। মেসির ফ্রি-কিকে সবাই লাফিয়ে ওঠে। তাঁদের পায়ের নিচে জায়গা তৈরি হয়। মেসি সেই সুযোগটা নিয়েই নিচু করে শট নেন। এতেই কাজ হয়। লা লিগায় ৬০০০তম গোল পায় বার্সেলোনা। আর সেটা আসে আর্জেন্টাইন জাদুকরের পা থেকেই। মিনিট দু-এক পর আরেকটা গোল পেত মেসি। এবার আরও একবার বাধা হয়ে দাঁড়ায় গোলপোস্ট।

৭৩তম মিনিটে সুয়ারেজেকে আবারও আটকে দেন আলাভেস গোলরক্ষক। এরপর ৮২তম মিনিটে দ্বিতীয়ার্ধে বদলি হিসেবে নামা ব্রাজিলিয়ান তারকা কুতিনহোকে বল বাড়িয়ে দেন মেসি। কুতিনহোর শটও আটকে দেন আলাভেস গোলরক্ষক। কিন্তু পরের মিনিটে কুতিনহো বুলেটগতির যে শট নিলেন সেটা আর ঠেকিয়ে রাখতে পারেননি। কুতিনহোর গোলে ২-০ স্কোরে এগিয়ে যায় বার্সেলোনা। ৯০তম মিনিটে আবারও নিশ্চিত গোল পেতে পারতেন মেসি। আলাভেস গোলরক্ষক মেসিকে গোলবঞ্চিত করেন। এ নিয়ে কতবার যে দলকে রক্ষা করলেন এই গোলরক্ষক তার ইয়ত্তা নেই!

নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ। পুরো ম্যাচে গোল মিসের ডালা সাজিয়ে বসা সুয়ারেজ শাপমোচনের সুযোগ পান। ৯২তম মিনিটে সুয়ারেজের দুর্দান্ত ক্রস থেকে ক্লিনিক্যাল ফিনিশিং করেন মেসি।-প্রথম আলো

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)