মাল্টা চাষ করে সফলতা পেলেন খোরদো গ্রামের শিক্ষক মোঃ শামছুর রহমান

এক সময় বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলে চাষ হতো মাল্টা। কিন্তু বর্তমানে ফলটি আর পাহাড়ে সীমাবদ্ধ নেই, দেশের সমতল ভূমিতেও মাল্টার চাষ করে ইতিমধ্যে সফলতা পেতে শুরু করেছেন কৃষকরা। তেমনি মাল্টা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন সাতক্ষীরা কলারোয়া উপজেলার দেয়াড়ার খোরদো গ্রামের মাদ্রাসা শিক্ষক মোঃ শামছুর রহমান। তিনি শিক্ষাকতার পাশাপাশি কৃষি কাজ করতেন। ২০০৯ সালে তিনি প্রথম নার্সারী স্থাপন করেন। নার্সারীর চারা বিক্রির পাশাপাশি তিনি তিন বিঘা জমির উপর কুলের বাগান করেন। ২০১৬ সালের জুন-জুলাই মাসে তিনি ঐ তিন বিঘা জমির কুলের বাগার কেটে মাল্টা চাষ করেন এবং সফলতা লাভ করেন।
মোঃ শামছুর রহমানের মাল্টার বাগানের সফলতা দেখে পার্শ্ববর্তী খোরদো গ্রামের খোরদো হাইস্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক জি.এম. আমিনুর রহমান শামছুর রহমারের নিকট থেকে ৪৫০টি মাল্টার চার নিয়ে ৪ বিঘা জমির উপর মল্টা চাষ শুরু করেছেন। এছাড়াও মোঃ শামছুর রহমানের নিকট থেকে ২০০০ মাল্টার ২০০০ থাই-পেয়ারার চারা নিয়ে ঝিকড়গাছা থানার মাটশিয়া গ্রামের দুই ভাই আবুবক্কর সিদ্দীক ও আব্দুল কাদের ১৩ বিঘা জমির উপর বৃহৎ পরিসরে মাল্টা ও সাথী ফসল হিসাবে পেয়ারার চাষ শুরু করেছেন। তাছাড়া সাতক্ষীরার অনেকেই শকের বসে বাড়ির ছাদে মাল্টা চাষ শুরু করেছে।

বর্তমানে মোঃ শামছুর রহমানের বাগানে ৪৫০টির বেশি মাল্টা গাছে মাল্টা ধরেছে যা জেলার চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাতে রপ্তানি হচ্ছে। মোঃ শামছুর রহমান জানান, অন্যান্য ফলের তুলনায় কম খরচে সহজে মাল্টা চাষ করা যায়। রোগও তুলনামুলক কম হয়। এক বিঘা জমিতে ১০০ থেকে ১৫০টি চারা রোপণ করা যায়। এক ফুট বাই এক ফুট গর্ত করে প্রয়োজনীয় রাসায়নিক ও জৈব সার ব্যবহার করে মাল্টা চাষ করা যায়। তবে সাধারণত ২বছর পরে প্রতিটি মাল্টা গাছ থেকে ২৫০- ৩০০টি ফল পাওয়া যায়। ফেব্রুয়ারি – মার্চ মাসে ফুল আছে এবং অক্টোবর – নভেম্বর মাস থেকে ফল পাওয়া যায়। বর্তমানে মোঃ শামছুর রহমান মাল্টার চারা উৎপাদন করে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি করছেন। সহযোগিতার ব্যাপারে মোঃ শামছুর রহমান বলেন, আমি সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে বাগান করেছি। কৃষি কর্মকর্তা কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পরেনি। তবে স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ২-৩ দিন আমার বাগানে এসেছিলেন এবং কিছু দিক নির্দেশনা মুলক উপদেশ দেন।

মোঃ শামছুর রহমানের মাল্টা বাগান সম্পর্কে জানতে চাইলে কলারোয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মহাসিন আলী জানান, ইতিমধ্যে কলারোয়া উপজেলা নির্বহী কর্মকর্তা ও আমি শামছুর রহমানের বাগান পরিদর্শণ করেছি। তার বাগান দেখে আমরা খুবই আপ্লিত। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হিসাবে শামছুর রহমানের যা যা সহযোগিতা প্রয়োজন তার সবটুকুই করবো। তিনি আরও বলেন, শামছুর রহমানের মাল্টা বাগান দেখে অনেকে উৎসাহিত হয়ে মল্টা চাষ শুরু করেছে। আমি মরে করি, বিদেশী নির্ভরতা কমিয়ে স্থানীয় ভাবে মাল্টা চাষ করে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)