ভুল স্বীকার করে দ্বিতীয় সুযোগ চাইলেন জাকারবার্গ

 আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সামাজিক যোগাযোগের জনপ্রিয় মাধ্যম ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য তৃতীয় পক্ষের কাছে বেহাত কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে ফেসবুককে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আরেকটি সুযোগ চেয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক তার কাছে জানতে চান, ফেসবুকের নেতৃত্ব দেওয়ার পক্ষে আপনি কি এখনো নিজেকে উপযুক্ত বলে মনে করেন?
এমন প্রশ্নের জবাবে মার্ক জাকারবার্গ নিজের দোষ স্বীকার করে বলেন, ‘এটি একটি বিশাল ভুল, এটি আমার ভুল। আমি ভুল শুধরে নিয়ে ফেসবুককে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আরেকটি সুযোগ চাই।’
জাকারবার্গ আরো বলেন, ‘মানুষ ভুল থেকে শিক্ষা নেয়, আমিও আশাবাদী আমরা এই সমস্যার সমাধান করব।’
জাকারবার্গ বলেন, এ ধরনের সমস্যা সমাধানে সময় এবং অত্যন্ত দক্ষতা প্রয়োজন। কারণ পুরো বিষয়টিই খুব দক্ষতার সঙ্গে করা হয়েছিল। তবে তিনি আত্মবিশ্বাসী সেই সমাধান তিনি খুঁজে পাবেন।
ফেসবুকের পরিচালনা পরিষদ তাকে সরে দাঁড়াতে বলেছে কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্ন তিনি পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, এমন কোনো কথা আমার কানে আসেনি। তথ্যফাঁসের জন্য এখনো কাউকে বরখাস্ত করেনি ফেসবুক। একটা ভুলের জন্য কাউকে চলন্ত বাসের নিচে ফেলে দেয়ার পক্ষপাতী আমি নই।
জাকারবার্গের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ফেসবুকের মাধ্যমে আট কোটি ৭০ লাখ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য লন্ডনভিত্তিক রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালাইটিকাকে দেওয়া হয়েছিল। এগুলোর মধ্যে প্রায় ১১ লাখ অ্যাকাউন্ট যুক্তরাজ্যভিত্তিক। এর আগে, এই কেলেঙ্কারি ফাঁস করে দেওয়া ক্রিস্টোফার ওয়াইলি বলেছিলেন, প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ফেসবুকের প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা মাইক স্ক্রফার এক ব্লগে জানিয়েছেন, ‘দিস ইজ ইওর ডিজিটাল লাইফ’ নামের একটি কুইজ অ্যাপের মাধ্যমে এই তথ্য ফাঁস সম্ভব হয়েছে। ফেসবুক ধারণা করছে তিন লাখেরও বেশি মানুষ এই অ্যাপটি ব্যবহার করেছেন। আগে বলা হয়েছিল, এই সংখ্যা দুই লাখ ৭০ হাজার।

অ্যাপ ব্যবহারকারীদের প্রায় ৯৭ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী। মোট ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে এক কোটি ৬০ লাখ যুক্তরাষ্ট্রের বাইরের। এসব তথ্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জয়ী করার জন্য ব্যবহার করা হয়।

এই কেলেঙ্কারি প্রকাশিত হওয়ার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে ফেসবুক। কর্তৃপক্ষ জানতো যে ক্যামব্রিজ অ্যানালিটিকা লক্ষাধিক ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে কাজ করছে। কিন্তু লন্ডনভিত্তিক সংস্থাটি সেসময় দাবি করে, তারা সেসব তথ্য মুছে দিয়েছে। এই বক্তব্য বিশ্বাস করে ফেসবুক।
যুক্তরাজ্যের তথ্য কমিশনের একজন মুখপাত্র জানান, কোনো পদক্ষেপ নেয়ার আগে তারা এই বিষয়ের তথ্য-প্রমাণাদি নিয়ে আরো যাচাই করবে।
আগামী সপ্তাহে এসব অভিযোগের জবাব দেওয়ার জন্য মার্কিন কংগ্রেসের বিশেষ কমিটির সামনে দাঁড়াতে হবে জাকারবার্গকে।
কমিটির চেয়ারম্যান গ্রেগ ওয়ালডেন কমিটির সামনে বসতে চাওয়ার জন্য জাকারবার্গকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, এর ফলে মানুষরা বুঝতে পারবেন, তাদের ব্যক্তিগত তথ্য কীভাবে এবং কতটা সুরক্ষিত থাকছে।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)