বেপরোয়া সাতানী-ভাদড়া স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ: নাশকতা মামলার আসামীরা হচ্ছেন কমিটির সদস্য
বিশেষ প্রতিনিধি:
একাধিক নাশকতা মামলার আসামী সহকারি শিক্ষক রাশেদ আলী ও প্রভাষক আনারুল ইসলামকে ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বানাতে মরিয়া হয়ে পড়েছে সাতক্ষীরা সদরের সাতানী ভাদড়া স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ জামায়াতের অর্থ যোগানদাতা শিকদার আবুল কালাম আজাদ। তার এই দূরভিসন্ধি বাস্তবে রুপদান করার জন্য কোন নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে তিনি গোপনে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া থেকে শুরু করে ইতিমধ্যে প্রায় সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। তবে মজার বিষয় হলো প্রত্রিকায় বিজ্ঞাপন আকারে তিনি যে তফসিল ঘোষণা করেছেন সেখানে কার সাথে, কীভাবে যোগাযোগ করা হবে এমন কোন কিছুই উল্লেখ নেই।
সরেজমিনে শনিবার দুপুরে স্কুল এন্ড কলেজে গেলে একাধিক শিক্ষক বলেন, প্রিজাইডিং অফিসার শাম্মি আক্তার ঢাকায় থাকার সুযোগে তাকে ভুল বুঝিয়ে অধ্যক্ষ গোপনে এবং খুব দ্রুততার সাথে ২৩ মে স্থানীয় একটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন আকারে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। তবে আমাদের কাউকে এ ব্যাপারে জানানো হয় নি। এমনকি আজ(শনিবার) সকাল ১১টায় আমরা প্রতিষ্ঠানে আসলে অধ্যক্ষ আমাদেরকে বলেন, প্রতিষ্ঠানতো বন্ধ, আপনারা কি করতে এসেছেন? আপনারা বাড়ি চলে যান। অনেক আগে অধ্যক্ষ আমাদের বলেছিলেন, প্রতিষ্ঠানের কমিটি গঠন করতে হবে, তবে আপনারা চিন্তা করবেন না। কমিটি গঠনের আগেই আপনাদের সবাইকে মোবাইল করে ডাকা হবে। আমরা গোপনে জানতে পারি আজ অধ্যক্ষ নিজের পছন্দমতো শিক্ষককে গোপনে শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। তাই আমরা প্রতিষ্ঠানে এসেছি।
আকুব আলী, হাসান আলী গাইন, আহসানুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা আনসার আলীসহ একাধিক অভিভাবক বলেন, তফসিল ঘোষনার আগে ভোটার লিস্ট যাচাই বাছাই করে প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের নির্র্বাচন সংক্রান্ত ব্যাপারে জানাতে হয়। কারণ ছাত্রছাত্রীরা যাতে তারা বাড়ি যেয়ে অভিভাবকদের জানাতে পারে। কিন্তু প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুযোগে অধ্যক্ষ এ ব্যাপারটি কাউেেক জানান নি। এমনকি বিদ্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে তফসিল টানানোর নিয়ম থাকলেও তিনি আজ(শনিবার) সকাল সাড়ে ১২ টায় সেটি টানিয়েছেন। আমরা ১২টার দিকে জানতে পেরে মনোনয়ন ফর্ম কিনতে এসেছি। মনোনয়ন ফর্ম কিনতে ৩০০ টাকার বেশি নেওয়ার কথা না। কিন্তু আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে ৩ হাজার। আমাদের পাশের কলেজে এবারের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনের মনোনয়ন ফর্ম বিক্রি হয়েছে ৩০০ টাকা করেু। ্আমরা এখন এসে জানলাম, দূর্ণীতিগ্রস্থ সভাপতি মাইনুদ্দীন তারেককে আবার এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি করার জন্য অধ্যক্ষ নিজের পছন্দমতো নাশকতা মামলার আসামীদের নিয়ে কমিটি করার জন্য গোপনে এগুলো করেছেন।
প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ শিকদার আবুল কালাম আজাদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোন কিছুই করছি না। যা কিছুু করছেন প্রিজাইডিং অফিসার শাম্মি আক্তার করছেন। তবে প্রিজাইডিং অফিসার শাম্মি আকতারের মোবাইল নম্বর চাইলে তিনি বলেন, তিনিতো এখন ঢাকায় আছেন। তার অবর্তমানে মোছাঃ নাজমুন্নাহার দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন আমি সেটি পালন করছিমাত্র।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ম্যাজিস্ট্রেট মোছাঃ নাজমুন্নাহার বলেন, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ছাপানোর জন্য তিনি আমার সাথে যোগাযোগ করেন। তারপর তিনি কী করেছেন সেটি আমি জানিনা। পরবর্তীতে এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ আমার সাথে আর কোন যোগাযোগ করেননি।
প্রিজাইডিং অফিসার শাম্মি আক্তার বলেন, আমি ট্র্রেনিং এর কারণে ঢাকাতে থাকায় নাজমুন্নাহার দায়িত্ব পালন করছেন। আপনারা তার সাথে যোগাযোগ করেন।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোঃ ইফতেখার হোসেন বলেন, প্রিজাইডিং অফিসােেরর অবর্তমানে কারো দায়িত্ব পালন করার সুযোগ নেই। প্রিজাইডিং অফিসার শাম্মি আকতার এখন ঢাকায় ট্রেনিং এ আছেন। সাতানী ভাদড়া স্কুল এন্ড কলেজের নির্বাচন সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম এখন থেকে বন্ধ থাকবে।