বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে শুধু পুরুষদের শাস্তি কেন?

বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জন্য ভারতীয় দণ্ডবিধি (ইন্ডিয়ান পেনাল কোড বা আইপিসি)-তে যে শাস্তির বিধান রয়েছে, তাতে বিবাহিত পুরুষ ও বিবাহিত নারীর সমানাধিকার ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। যা ভারতীয় সংবিধানের (১৪ নম্বর অনুচ্ছেদ) পরিপন্থী।ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৮ বছরের পুরনো ধারা (৪৯৭) সম্পর্কে এটাই সু্প্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ। ৪৯৭ নম্বর ধারার সাংবিধানিক বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দায়ের হওয়া একটি মামলার শুনানি ছিল বৃহস্পতিবার, শীর্ষ আদালতে।

প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ এ দিন বলেছে, বিয়ের পবিত্রতা রক্ষা করার অবশ্যই প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু সেই পবিত্রতা রক্ষার লক্ষ্যে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের জন্য শাস্তি দেওয়া হচ্ছে বিবাহিত পুরুষদেরই। ভারতীয় সংবিধানে যে সমানাধিকারের কথা বলা হয়েছে, এর ফলে, তা ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।

কোনও বিবাহিত মহিলা তাঁর স্বামীর সম্মতি নিয়ে অন্য কোনও বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হলে যে আইনের ‘রক্তচক্ষু’ এড়িয়ে যেতে পারেন, সাংবিধানিক বেঞ্চ সেটাও ‘সঠিক’ মনে করছে না। বেঞ্চের মতে, ওই আইনে (ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৭ নম্বর ধারা) ‘যেন কিছু চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে’। তাতে ক্ষুণ্ণ হচ্ছে বিবাহিত নারীর মর্যাদাও।

সাংবিধানিক বেঞ্চ বলেছে, ‘‘স্বামীর সম্মতি নিয়ে কোনও বিবাহিত নারী যদি অন্য কোনও বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হন, তবে তা অপরাধ হয় না। যেন স্বামীর সম্মতিটাই বিবাহিত নারীর রক্ষকবচ! এর ফলে বিবাহিত নারী তাঁর স্বামীর অস্থাবর সম্পত্তি (চেট্টাল) হয়ে উঠছেন।’’

প্রধান বিচারপতি ছাড়াও সাংবিধানিক বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি আর এফ নরিম্যান, বিচারপতি এ এম খানউইলকর, বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি ইন্দু মলহোত্র।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)