প্রেম, বিয়ে অতঃপর কালিগঞ্জে মাদ্রাসা ছাত্রীকে মৌখিক তালাক

আরাফাত আলী, কালিগঞ্জ:
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে মাদ্রাসায় পড়ুয়া নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক করে তাকে গোপনে বিয়ে অতঃপর বিষয়টি জানাজানি হলে গন্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে মেয়ের পরিবারকে হুমকি-ধামকি দিয়ে আবার ওই ছাত্রীকে গোপনে মৌখিক তালাক দিলেন একই মাদ্রাসার অফিস সহকারি । অল্প বয়স্ক মেয়েকে বাল্য বিবাহ করে আবার তাকে মৌখিক তালাক দেওয়ায় ওই অফিস সহকারির শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। রোববার সন্ধায় কালিগঞ্জের রঘুনাথপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নাম প্রকাশ না করে স্থানীয়রা বলেন, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের মোহম্মদ নগর দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেণির ছাত্রী ও রঘুনাথপুর গ্রামের আব্দুল্লাহ সরদারের মেয়ে মাছুরা খাতুনের(১৪) সাথে প্রেমের সম্পর্ক করে একই মাদ্রাসার অফিস সহকারি ও রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত হারান গাজীর ছেলে ৩ সন্তানের বাবা ইব্রাহিম গাজী(৩৮)। প্রেমের সম্পর্ককে পরিণয়ে রুপ দিতে ওই অফিস সহকারি ৩ মাস আগে ওই ছাত্রীকে সাতক্ষীরায় এনে গোপনে বিয়ে করেন এবং বিষয়টি গোপন রাখেন। বিয়ের বিষয়টি প্রকাশ পেলে তিনি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে মেয়ের পরিবারকে হুমকি-ধামকি দিয়ে রবিবার ওই ছাত্রীর পরিবারকে ৬০ হাজার টাকা দিয়ে তাকে মৌখিক তালাক প্রদান করেছেন।
ওই ছাত্রীর বাবা আব্দুল জলিল গাজী ও চাচাতো ভাই ইব্রাহিম হোসেন বিয়ের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, তাদের বিয়ে হয়ে ছিল তবে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে মিমাংসা করে দিয়েছেন। মেয়ের নিকট থেকে তালাক নামায় স্বাক্ষর করিয়ে কাবিন নামা ছিঁড়ে ফেলেছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, আমি শুনেছি মেয়েকে মৌখিক তালাক দিয়েছে। আমি আওয়ামীলীগ করি। আমি ওই তালাকের বিরোধিতা করায় ওই অফিস সহকারি কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি হওয়ায় সে আমাকে বাদ দিয়ে ওই তালাক করিয়েছে।
তবে অফিস সহকারি ইব্রাহিম হোসেন বিয়ের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমাদের বিয়ে হয়নি। আর আািম দুই দিনের জন্য ছুটি নিয়ে বাইরে আছি।
কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কে এম মোশাররফ হোসেন বলেন, আমি বিষয়টি শুনেছি। মেয়েটাকে বিয়ে করেছে এটা সত্য। স্থানীয়ভাবে বসে তারা মিমাংসা করে নিয়েছে। আমরা বারবার মেয়ে পক্ষকে লিকিত অভিযোগ দিতে বলেছি কিন্তু তারা কোন অভিযোগ দেয়নি। মেয়ের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে আমরা অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতাম।
কালিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মাঈনুদ্দিন হাসান বলেন, এ ব্যাপারে আমাকে কেউ জানায়নি। তবে অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অপর একটি প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, কারো বাল্য বিবাহ হলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বাদি হয়ে বাল্য বিবাহের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবেন।

দৈনিক সাতক্ষীরা/জেড এইচ

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)