প্রায় দেড় কোটি টাকা বিভিন্ন এলাকায় চড়া সুদে কারবার করছে জামাতের ২৪ জন পরিচালক
নিজস্ব প্রতিনিধি:
দূর্বার সমবায় সমিতির আড়ালে জামাত শিবির দীর্ঘদিন ধরে ঝাউডাঙ্গা এলাকায় তৎপরতা চালাচেছ। জামাতের একাধিক মামলার আসামিরা এ সমিতি থেকে খরচ নিচ্ছে মাসে মাসে। সমবায় সমিতি থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা বিভিন্ন এলাকায় চড়া সুদে তারা কারবার করছে। একটি গোয়েন্দা সংস্থা ইতিমধ্যে জামাত শিবিরের এ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে তদন্ত করেছে। তদন্তে ঘটনার সত্যতা মিলায় সমবায় অফিস থেকে তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। এরপরও জামাত শিবিরের নেতাকর্মীরা গোপনে সমিতির কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। শতাধিক জামাত শিবিরের নেতাকর্মীরা দূর্বার সমবায় সমিতির অফিসে গোপন সভা করার সময় পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নাশকতার একাধিক মামলার দুই আসামিকে।
একটি দায়িত্বশীল সুত্র জানান,সদরের ঝাউডাঙ্গা বাজারের সরিয়া ভিত্তিক দূর্বার নামে একটি সমবায় সমিতি গড়ে তোলে জামাত শিবিরের নেতাকর্মীরা। ২৪ জন পরিচালক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান হচ্ছে ঝাউডাঙ্গা ইউনিয়ন জামাতের সাবেক আমির ৫ নাশকতা মামলার আসামি পাথরঘাটা গ্রামের আব্দুর রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান জামাত কর্মী রফিকুল ইসলাম,সেক্রেটারি জামাতের রোকন দুটি হত্যাসহ ৮ নাশকতা মামলার আসামি হাছিমপুর গ্রামের মুছা,ক্যাশিয়ার কলারোয়ার বাকসা গ্রামের সাবুর আলি,সদস্য গোবিন্দকাঠি গ্রামের জামাত কর্মী নজরুল ইসলাম, কামারবাসা গ্রামের জামাতের রোকন ৫টি নাশকতা মামলার আসামি ইব্রাহিম হোসেন,গোবিন্দকাঠি গ্রামের জামাত কর্মী নজরুল ইসলাম,কলারোয়া উপজেলার মুরারিকাঠি গ্রামের জামাত নেতা আব্দুল মহিত খান,ওয়ারিয়া গ্রামের জামাত নেতা আব্দুর রহিমের ছেলে শিবির কর্মী নূরুল বুখারি,ঝাউডাঙ্গা গ্রামের আবুল কালাম,গোবিন্দকাঠি গ্রামের জামাত কর্মী রেজাউল ইসলাম,পাথরঘাটা গ্রামের জামাত নেতা ও ৩টি নাশকতা মামলার আসামি আমিনুর রহমান,গোবিন্দকাঠি গ্রামের শরিফুল ইসলাম,জামাত কর্মী পাথরঘাটা গ্রামের আরিজুল ইসলাম,জামাত কর্মী জামাত নেতা কামারবাসা গ্রামের শহিদুল্লাহ,কলারোয়া উপজেলার তুলসিডাঙ্গা গ্রামের হুমায়ন কবির,কামারবাসা গ্রামের জামাত নেতা আবু মুছা,পাথরঘাটা গ্রামের জামাতের রোকন ২টি নাশকতা মামলার আসামি আকছেদ আলি,ওয়ারিয়া গ্রামের জামাত নেতা মাও:আব্দুর রশিদ,জামাত নেতা ঝাউডাঙ্গা গ্রামের আব্দুল হামিদ,গোবিন্দকাঠি গ্রামের জামাত নেতা শাহাজদ্দিন,ঝাউডাঙ্গা ওয়ার্ড জামাতের সভাপতি আইজদ্দিন মোড়লে ছেলে আবুল। আবুলের মা জামাতের রোকন।একই গ্রামের জামাত নেতা শফিকুল ইসলাম ও গোবিন্দকাঠি গ্রামের মাসুম বিল্লাহ।
সমিতি থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা বাজারের বিভিন্ন ব্যাবসায়ী ও লোকজনকে চড়া সুদে কিন্তু করে টাকা দেওয়া হয়। এ অফিস থেকে ২০১৩সালে জামাত শিবির নেতাকর্মীরা বিভিন্ন এলাকায় হামলা ,আগুন,রাস্তা অবরোধ,পুলিশের উপর হামলা পরিচালানা করে এই কমিটির সদস্য কলারোয়ার গোয়ালচাতর গ্রামের জামাতের শীর্ষ নেতা আহম্মদ আলি। এখান থেকে প্রতিদিন ভাগ ভাগ করে পাঠানো হতো বিভিন্ন এলাকায় হামলার জন্য। খরচ দেওয়া হতো রাতে ও দুপুরের খাওয়া,ভ্যান ভাড়াসহ বিভিন্ন খরচ। সন্ধ্যার পরে জামাতের শীর্ষ নেতারা সভা করতেন সমিতির অফিসে।
২০১৬ সালে একটি গোয়েন্দা সংস্থার নজরে আসে দূর্বার সমবায় সমিতির আড়ালে জামাত শিবিরের কার্যক্রম।তদন্তে ঘটনার সত্যতা পান তারা। পরে বাতিল করা হয় তাদের টাকা খাটানোর অনুমোদন।গ্রেপ্তার করা হয় ওই সমবায় সমিতির ক্যাশিয়ার একাধিক নাশকতা মামলার আসামি মাও: ইব্রাহিমকে। এরপরও তারা গোপনে চালাতে থাকে তাদের কার্যক্রম।
বাজারের কয়েক জন আওয়ামীলীগ নেতা জানান,ঝাউডাঙ্গা দূর্বার সমবায় সমিতির অফিসে শতাধিক জামাত শিবির নেতাকর্মীরা গোপনে সভা করেছে বর্তমান সরকারকে বেকায়দায় ফেলানোর জন্য। দূর্বার সমবায় সমিতির আড়ালে তারা জামাত শিবিরকে সংগঠিত করেছিল। সমিতির লাভের টাকা দিয়ে তারা নাশকতা মামলার আসামিদের সহযোগিতা করে আসছিল। পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই অফিসে অভিযান চালায়। গ্রেপ্তার করা হয় ৩টি নাশকতা মামলার আসামি কামারবাসা গ্রামের আব্দুল হান্নান ও ঝাউডাঙ্গা গ্রামের ৩টি নাশকতা মামলার আসামি ওলিয়ার। পালিয়ে যায় শতাধিক জামাত শিবির নেতাকর্মীরা।
সদর থানার এসআই হারুন জানান,গোপন সভা চলাকালে ঝাউডাঙ্গা বাজারের দূর্বার সমবায় সমিতির অফিসে অভিযান চালানো হয়। গ্রেপ্তার করা হয় দুই জনকে। পালিয়ে যায় শতাধিক জামাতের নেতাকর্মী।
Please follow and like us: