পানির প্লান্টে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের প্রতিশোধ নিতে গেটের পাট বন্ধ

আশাশুনি প্রতিনিধি :
উজিরপুর স্লুইস গেটের পাট বন্ধ করার কারণে আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ইউনিয়নের হাজার হাজার বিঘা জমির মৎস্য ঘের পানির অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে। ফলে ঘের মালিকদের মাথায় হাত উঠেগেছে। গোদাড়ায় অবস্থিত পানির প্লান্টের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় চাম্পাফুল এলাকায় খাবার পানি সরবরাহ বন্দ হয়ে যাওয়ায় প্রতিশোধ নিতে গেটের পাট বন্দ করা হয়েছে বলে জানাগেছে।
শোভনালী ইউনিয়নের চন্ডিদহা, বাটরা, জেমরি, কামালকাটি, শোভনালী, বালিয়াপুর ও বৈকরঝুটি বিলের মৎস্য ঘেরে পানি উত্তোলন ও পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ চাম্পাফুল ইউনিয়নের উজিরপুর (চাঁদখালী) স্লুইস গেট। এই গেটের পানি দিয়ে এসব বিলের ৫/৬ হাজার বিঘা জমির মৎস্য ঘেরে মাছ চাষ করা হয়ে থাকে। গত ২০ এপ্রিল থেকে গেটের পাট বন্দ করে দেওয়া হয়েছে। গেট তদারকির দায়িত্বে থাকা কান্ত সরকার জানান, চাম্পাফুল ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে গেট বন্দ করে দেওয়া হয়েছে। পানির প্লান্টের ব্যবস্থাপনায় থাকা ইউপি সদস্য গোলাম কাইয়ুম জানান, প্লান্টটি রাত ১০ টা থেকে সকাল ১০ টা পর্যন্ত চালান হয়। ১৯ এপ্রিল রাতে কে বা কারা বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিলে প্লান্ট বন্দ হয়ে যায়। ২১ এপ্রিল পুনঃ সংযোগ নেওয়ার পর রাতে চালু করা হলে এদিন রাতে আবার বিচ্ছিন্ন করা হয়। ফলে প্লান্ট বন্ধ থাকায় চাম্পাফুল এলাকায় পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। চাম্পাফুলের লোকজন খাবার পানির সংকটে পড়ার কারণে গেট বন্দ করে দেওয়া হয়েছে। ঘের মালিক রফিকুল মোল্যা জানান, এলাকার অধিকাংশ ঘেরের পানি শুকিয়ে গেছে, গরমে ঘেরের মাছ মরে যাচ্ছে। ঘেরে ঝাঁকে ঝাঁকে বক পাখি বসে মাছ ধরে খাচ্ছে। দু’একদিনের মধ্যে পানি উঠানো না গেলে ঘের ব্যবসা শেষ হয়ে যাবে। শোভনালী ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ আগে গেটের পাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে এলাকার ৫/৬ হাজার বিঘা জমির মাছের ঘেরের মাছ মরে যাচ্ছে। আমি নিজে পাউবোর সাথে যোগাযোগ করে গেটের পাট লাগিয়েছি। অথচ আমাকে না জানিয়ে গেট বন্ধ করে এলাকাবাসীকে ক্ষতিগ্রস্ত করা মেনে নেওয়া যায়না। পানির প্লান্ট চালুর পর এলাকার সকল ডিপ টিউব ওয়েলের লেয়ার ফেল করেছে। কেউ পানি পাচ্ছেনা। তবে প্লান্টের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ঘটনাও আমাকে জানানো হয়নি। প্লান্টে দায়িত্বরতরা সুইচ অন করে চলে যায়, সেখানে পাহারায় থেকে নিরাপত্তা রক্ষা করা উচিৎ। কিন্তু কে বা কারা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করলো তার দায় গোটা এলাকার ঘেরের পানি বন্দ করে মাছ নিধনের মাধ্যমে প্রতিশোধ নেওয়া চরম অপরাধ বলে আমি মনে করি। চাম্পাফুল ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বলেন, গেট পানি উঠানোর জন্য না, গেট দিয়ে পানি সরবে। গেট দিয়ে পানি উঠালে এলাকা তলিয়ে যাবে আমি সেটা করতে চাইনা। ১০/১২ দিন আগে থেকে পানি উঠানো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পানির প্লান্টের সংযোগ বিচ্ছিন্ন’র পর জিডি করা হয়। তখন সংযোগ দেওয়া হলে পুনরায় সংযোগ সেখানের লোকজন কেটে দিয়েছে। এরআগেও তালা লাগিয়ে সমস্যা করা হয়েছিল। এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানাগেছে, বিষয়টি সুরাহা করা না গেলে যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছেন। এব্যাপারে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)