পর্দার আড়ালে নানামুখী তৎপরতা

দরজায় কড়া নাড়ছে একাদশ জাতীয় নির্বাচন। কী হয়, কী হবে, নানা অনিশ্চয়তা। তারপরও পর্দার অন্তরালে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ আর জল্পনাকল্পনা। এদিকে নির্বাচনের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছে রাজনৈতিক দলগুলো। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে এরই মধ্যে দলের তৃণমূলকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, আগামী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে ধরে নিয়ে সেভাবেই প্রস্তুতি নিতে। অভ্যন্তরীণ কোন্দল নিরসনই দলটি প্রধান চ্যালেঞ্জ মনে করছে।

অন্যদিকে, নানা অনিশ্চয়তার পরও বিএনপি নির্বাচনের এক ধরনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। দলটি এখন সবচেয়ে বেশি চেষ্টা করছে অপেক্ষাকৃত প্রগতিশীল মনোভাবাপন্ন দলগুলোর সমন্বয়ে একটি বৃহৎ জোট গঠনের জন্য। বিএনপির পক্ষ থেকে একে জাতীয় ঐক্য নামে অভিহিত করা হচ্ছে। এ জাতীয় ঐক্যের জন্য বিএনপি সর্বোচ্চ ছাড় দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানাগেছে, জাতীয় ঐক্যের প্রচেষ্টায় শিগগিরই বিএনপি, গণফোরাম, বিকল্পধারা, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), নাগরিক ঐক্য ও কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ নিয়ে সরকার বিরোধী মোর্চা আত্মপ্রকাশ করবে। এ মের্চার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে পরিচালনা করা। এজন্য নির্বাচন কমিশনকে ঢেলে সাজানোসহ বেশকিছু দাবি সরকারের কাছে তুলবে তারা। এসব দাবি উপেক্ষা করে আগামী নির্বাচন তারা হতে দেবে না। তবে, বেশ কিছু জটিলতাও এখন পর্যন্ত রয়ে গেছে।

তবে ২০ দলীয় জোটের ভেতরও কিছু টানাপড়েন তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব বাড়ছে। সিলেট সিটি করপোরেশনে জোটের বাইরে গিয়ে জামায়াতের পক্ষ থেকে মেয়র পদে প্রার্থী দেয়া হয়েছে। অন্য সিটিগুলোতে জামায়াতের প্রার্থী না থাকলেও বিএনপির পক্ষে সেভাবে সরব নেই জামায়াতের নেতাকর্মীরা। এই পরিস্থিতিতে আগামী সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের অবস্থান কোন দিকে যায় সেদিকে দৃষ্টি থাকবে পর্যবেক্ষক মহলের। জামায়াতের আমির মকবুল আহমাদ সম্প্রতি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। এ নিয়েও রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।

এদিকে সরকারের অংশীদার জাতীয় পার্টির আগামী দিনে কী ভূমিকা হতে পারে তা নিয়েও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলে আলোচনা রয়েছে।

অন্যদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার আপিলের শুনানি এরই মধ্যে শুরু হয়ে গেছে। তার জামিনে মুক্তির ব্যাপারে এখন বিএনপির শীর্ষ আইনজীবীরাও কোনো আশার বাণী বলছেন না। দলটি শেষ পর্যন্ত এ ইস্যুতে কী কৌশল অবলম্বন করে, আদৌ কোনো কৌশল অবলম্বন করতে পারে কি-না সেটাও দেখার বিষয়।

আগামী অক্টোবরের শেষ দিকে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা রয়েছে। এর আগে পরে রাজনীতিতে নানা নাটকীয় ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)