নোবেল বঞ্চিত নারী পদার্থবিদ

এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ীদের একজন কানাডার ডোনা স্ট্রিকল্যান্ড। নোবেল পুরস্কারের ইতিহাসে ডোনা তৃতীয় নারী হিসেবে পদার্থবিদ্যায় এই পুরস্কার লাভ করেন। অন্য দু’জনের মধ্যে মেরি কুরি ১৯০৩ সালে ও মারিয়া গোপার্ট মায়ের ১৯৬৩ সালে নোবেল পান। অর্থাৎ ৫৫ বছর পর আবারো পদার্থে নোবেল বিজয়ী নারী। এতোটা সময় কেনো পদার্থবিদ্যায় নারীরা নোবেল পুরষ্কার প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন? শুধু কি যোগ্যতার অভাব না-কি অন্য কোনো কারণ? যদিও এ বিষয়ে বিজয়ী ডোনা বিবিসিকে বলেছেন, পদার্থবিজ্ঞানে একজন নোবেলজয়ী নারী পেতে এত সময় লাগাটা আসলেই খুব অবাক করার মতো! আসল কথা হলো, অনেক নারীই যোগ্য ছিলেন কিন্তু পাননি। জেনে নিন দাবিদার হওয়া স্বত্ত্বেও নোবেল বঞ্চিত পাঁচ নারী সম্পর্কে-

জোসেলিন বেল বার্নেল:

1.নোবেল বঞ্চিত নারী পদার্থবিদ

১৯৬৭ সালে ক্যামব্রিজে পিএইচডি করা অবস্থায় জোসেলিন বেল রেডিও পালসার আবিষ্কার করেন। ১৯৭৪ সালে এই আবিষ্কারের স্বীকৃতস্বরুপ নোবেল কমিটি পুরস্কারটি জোসেলিনের সুপারভাইজার অ্যান্টনি হিউশকে প্রদান করে। গার্ডিয়ান সংবাদপত্রে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জোসেলিন বলেন, নোবেল না পেলেও কাজের প্রতি একটুও উৎসাহ কমেনি বরং বেড়েছে।

লিন হাউ:

2.নোবেল বঞ্চিত নারী পদার্থবিদ

১৯৯৯ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা দলপতি হিসেবে সুপরিচিত লিন। তার গবেষণাটি ছিলো বস-আইনস্টাইন কনডেনসেট ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১৭ মিটার গতিসম্পন্ন বিম লাইট তৈরির ওপর। এর কাজ শেষ হয় টানা ৩ বছর অর্থ্যাৎ ২০০১ সালে।

ভিরা রুবিন:

3.নোবেল বঞ্চিত নারী পদার্থবিদ

রুবিন ১৯৮০ সালে ডার্ক মেটার আবিষ্কার করে জ্যোতির্বিজ্ঞানের নতুন দ্বার খুলেন। তবুও তার এ আবিষ্কারের স্বীকৃতি মেলেনি। ২০১৬ সালে এই বিজ্ঞানী মারা যান।

শিয়েন-শিয়াং উ:

4.নোবেল বঞ্চিত নারী পদার্থবিদ

পদার্থবিজ্ঞানের মৌলিক আইন “ল’ অব কন্সারভেশন অব প্যারিটি’কে ভুল প্রমাণিত করেছে শিয়েন-শিয়াং উ এর “উ এক্সপেরিমেন্ট”। তার পরীক্ষামূলক এই কাজটি পদার্থবিদ্যায় সহায়ক হলেও তিনি এ কাজে সম্মান পাননি। বরং তার পরিবর্তে এ গবেষণায় তার পুরুষ সহকর্মীরা ১৯৫৭ সালে নোবেল পুরস্কার জেতেন।

লেইস মেটনার:

5.নোবেল বঞ্চিত নারী পদার্থবিদ

পদার্থবিজ্ঞানী লেইস মেটনার পারমাণবিক বিভাজন আবিষ্কারে নেতৃত্ব দেন। যদিও তার আবিষ্কারটি ১৯৪৪ সালে নোবেল পুরষ্কার জেতে তবে লেইস নয় বরং তার সহ-আবিষ্কারক ম্যান্ডেলিজ মেডোড্র্যাগ।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯০১ থেকে ১৯২০ সালে মাত্র ৪ জন নারী নোবেল পান। ১৯২১ থেকে ৪০ এবং ১৯৪১ থেকে ৬০ সালে যথাক্রমে ৫ ও ৩ জন নারী নোবেল পুরস্কার পান। এরপর ১৯৬১ থেকে ১৯৮০ সালে ৭ নারী এবং ১৯৮১ থেকে ২০০০ সালে ১১ জন নারী নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন। আর ২০০১ থেকে ২০১৭ সালে মোট ১৯ নারী বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক এই পুরস্কার পেয়েছেন। নোবেল পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাদ দিলে দেখা যায়, ১৯০১ থেকে ১৯১৭ সাল পর্যন্ত সময়ে যেখানে ৮৯৬ জন নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন, তার মধ্যে মাত্র ৪৮ জন নারী। তাঁদের মধ্যে মেরি কুরি দুবার নোবেল পান।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)