দ্বীপ বেষ্টিত গাবুরাতে কুড়িয়ে পাওয়া শাকের রান্না প্রতিযোগিতা

জি,এম শাহাদাতঃ
প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া প্রকৃতির গাছ-গাছড়া, শাক, লতা, গুল্ম, ফল, মূল ও উদ্ভিদ প্রভৃতি অচাষকৃত উদ্ভিদবৈচিত্র্যের সংরক্ষণ ও সম্প্রসারণের লক্ষ্যে আজ মংগলবার ২৩ জানুয়ারী ২০১৮ তারিখে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে গাবুরা ইউনিয়নের খলিশাবুনিয়া গ্রামের কৃষক আব্দুল হামিদের বাড়িতে স্থানীয় চকবারা মানব কল্যান জেলে বাওয়ালী কৃষক সংগঠনের উদ্যোগে ও বারসিক সহযোগিতায় কুড়িয়ে পাওয়া অচাষকৃত শাকের স্বাদ গ্রহন ও রান্না প্রতিযোগিতা অনুষ্টিত হয়।
রান্না প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনকারী ১০ জন নারী প্রত্যেক নারী একটি করে সবজী/খাবার রান্না করে। ১০ রকমের (আদাবরুন, সেঞ্চি শাক, বাতোশাক, কলমী শাক, মাটিফোড়া, তেতুলের টক, কলার থোড়, সজিনার পাতা, থানকুনি, তেলাকচু,) কুড়িয়ে পাওয়া শাক/ বৈচিত্র্য রান্না করেন। যে সমস্ত শাক/ বৈচিত্র্য প্রতিযোগিতায় রান্না করা হয় তা এ সকল নারীরা বাড়ির আঙিনা, খাল-বিল, জলাশয় থেকে নিজেরা কুড়িয়ে আনেন।
গ্রামীন এক উৎসবমুখর পরিবেশে কুড়িয়ে পাওয়া শাক রান্না প্রতিযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল খাদ্য রান্না ও স্বাদ গ্রহন কর্মসূচী। ব্যতিক্রমধর্মী এ অনুষ্ঠানে বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিল স্থানীয় ইউপি সদস্য, নতুন প্রজন্মের ছাত্র-ছাত্রী, সাংবাদিক, কৃষি অফিসার, কৃষক-কৃষাণী, উন্নয়ন কর্মী এবং স্থানীয় জনগন। নির্ধারিত সময়ে রান্না শেষে চলে স্বাদ গ্রহন কর্মসূচি। রান্না প্রতিযোতিায় বৈচিত্র্যময় খাবার এর স্বাদ গ্রহন করেন সকল বিচারিক। ১০ জন নারীর (শাহিদা, ফতেমা, বকুল, শাহিদা, খালেদা, রোকেয়া, ফরিদা, রেশমা, শাহিদা, নাছিমা) প্রত্যেকেই তার নিজ হাতে রান্নার তরকারিটি প্রত্যেক বিচারকদের পাতে পরিবেশন করেন। রান্নার প্রধান উপকরণ কুড়িয়ে পাওয়া শাক/ তরকারী রান্না সম্পর্কে উপস্থিত সকলকে অবহিত করেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। সকল বিচারককের বিবেচনায় তেতুলের টক রান্না করে ১ম স্থান অধিকার করেছে রোকেয়া বেগম, শাহিদা বেগম কলমী শাক রান্না করে ২য় হয়েছেন এবং তেলাকচু শাক রান্না করে ৩য় হয়েছেন শাহিদা বেগম। নতুন প্রজন্মের মাঝে আগ্রহ মনোযোগ সৃষ্টিতে ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে গ্রামীণ নারীর অবদানকে স্বীকৃতি প্রদানের লক্ষ্যে বিজয়ী এবং অংশগ্রহনকারী সকল গ্রামীন নারীদের পুরস্কার প্রদান করা হয়।
কুড়িয়ে পাওয়া শাক রান্না প্রতিযোগিতায় অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ইউপি সদস্য আব্দুল রাজ্জাক, ওয়ার্র্ড আওয়ামীলেিগর সভাপতি শেখ আইযুব আলী, শিক্ষক মজিবর শেখ, কৃষক সিরাজুল ইসলাম, ডাক্তার আমিনুল রহমান মুকুল, শিক্ষার্থী নাজমা আক্তার, সাংবাদিক আল ইমরান ও বারসিক কর্মকর্তা পার্থ সারথী পাল প্রমুখ। কুড়িয়ে পাওয়া অচাষকৃত উদ্ভিদবৈচিত্র্য সনাক্তকরণ, শ্রেণীকরণ, সংরক্ষণ, ব্যবহার ও বিকাশের জন্য নতুন প্রজন্মের সাথে গ্রামীণ নারীদের সেতুবন্ধন তৈরীতে এ ধরনের আয়োজন ও প্রচারণা গুরুত্বপূর্র্ন ভূমিকা রাখতে পারে বলে স্থানীয় জনগণ মত প্রকাশ করেন এবং প্রসারে উদ্যোগী হওয়ার আহবান জানান।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)