দেশে ফিরলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

অনলাইন ডেস্ক:

জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ১৫ দিনের সফর শেষে ঢাকায় পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীকে বহন করা বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি বিশেষ বিমান মঙ্গলবার (৯ মে) সকাল ১০টা ৬ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।

এর আগে লন্ডনের স্থানীয় সময় সোমবার (৮ মে) সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে সফরসঙ্গীদের নিয়ে হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন তিনি। বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীম।

যুক্তরাজ্যসহ কমনওয়েলথভুক্ত দেশের রাজা ও রানী হিসেবে তৃতীয় চার্লস ও তার স্ত্রী ক্যামিলার অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গত ৪ মে প্রধানমন্ত্রী লন্ডনে পৌঁছান।

যুক্তরাজ্যে অবস্থানকালে শেখ হাসিনা ৬ মে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানির অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেন। লন্ডনে শেখ হাসিনা রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লিভারলি এবং তার স্ত্রী সুসানা স্পার্কসও লন্ডনের ক্লারিজ হোটেলে অবস্থানরত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। একই দিনে ক্লারিজ হোটেলের ফয়ের প্রাইভেট ডাইনিং রুমে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার আয়োজিত নৈশভোজে অংশ নেন তিনি। সেখানে ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগেল ওয়াংচুক এবং রানি জেটসুন পেমার সঙ্গেও বৈঠক করেন শেখ হাসিনা।

এছাড়া শেখ হাসিনা রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানের সাইডলাইনে মিসর ও রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট এবং সিয়েরা লিওন, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, গাম্বিয়া, নামিবিয়া ও উগান্ডার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন।

যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার এবং কমনওয়েলথ মহাসচিব ব্যারনেস প্যাট্রিসিয়া স্কটল্যান্ডও ৭ মে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। একই দিন লন্ডনের ম্যারিয়ট হোটেলে যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রধানমন্ত্রীকে নাগরিক সংবর্ধনা দেন এবং তিনি বিবিসিকে একটি সাক্ষাৎকারও দেন।

এর আগে, জাপানি প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার আমন্ত্রণে জাপানের টোকিওতে চার দিনের সরকারি সফর শেষ করে ২৯ এপ্রিল ওয়াশিংটন ডিসি পৌঁছান শেখ হাসিনা। যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংক অংশীদারত্বের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠান এবং কিছু পার্শ্ব ইভেন্টে যোগ দেন। এর মধ্যে নাগরিক সংবর্ধনার পাশাপাশি মার্কিন ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠক, বিশ্বব্যাংকের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট অজয় বঙ্গ এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভার সঙ্গে বৈঠক রয়েছে।

তিন দেশ সফরের প্রথম ধাপে ২৫ এপ্রিল স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ চার্টার্ড ভিভিআইপি ফ্লাইট (বিজি১৪০৩) টোকিওর হানেদা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সে সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে জাপান বিমানবন্দরে লাল গালিচা সংবর্ধনা এবং রাষ্ট্রীয় গার্ড অব অনার দেয়া হয়।

জাপান সফরে শেখ হাসিনা কৃষি, মেট্রোরেল, শিল্প আপগ্রেড, জাহাজ রিসাইক্লিং, শুল্ক বিষয়াদি, মেধাসম্পদ, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, আইসিটি ও সাইবার নিরাপত্তা সহযোগিতার বিষয়ে আটটি চুক্তি সই করেন।

২৬ এপ্রিল শেখ হাসিনা জাপানের সম্রাট নারুহিতোর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তারপর একই দিন তিনি চুক্তি সইয়ের পর জাপানি প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।

পরদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য চার জাপানি নাগরিককে ‘ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার’ হস্তান্তর করেন। পাশাপাশি তিনি একটি বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন ও একটি কমিউনিটি সংবর্ধনায় যোগ দেন।

সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে জাপানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োশিমাসা হায়াশি বৈঠক করেন। পাশাপাশি জাইকা, জেট্রো, জেইবিআইসি, জেবিপিএফএল ও জেবিসিসিইএল নেতাদের সঙ্গে একাধিক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দেন।

জাপানের প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের স্ত্রী আকি আবে এবং জাপানি স্থপতি তাদাও আন্দোর সঙ্গেও বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)