দেবহাটা নোড়ারচক খাস জমি ভূমিহীনদের নামে বন্দোবস্ত ও ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

দেবহাটা নোড়ার চক খাস জমি ভূমিহীনদের নামে বন্দোবস্ত ও ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। দেবহাটা নোড়ার চক ভূমিহীন সংগ্রাম কমিটির সভাপতি আব্দুল গফ্ফারের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন দেবহাটা- কালিগঞ্জ ভূমিহীন উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব ওহাব আলী সরদার। বিশেষ অতিথি ছিলেন সাতক্ষীরা জেলা ভূমিহীন সমিতির সভাপতি মোঃ কওছার আলী, ভূমিহীন ঐক্যপরিষদের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ, সাতক্ষীরা উন্নয়ন যুব সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোফিজুর রহমান, প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কল্যাণ সমিতির মহাসচিব আবুল কালাম আজাদ, নোড়ারচক ভূমিহীন সংগ্রাম কমিটির সহ-সভাপতি আবুল হোসেন, নোড়ারচক ছশা বিঘা ভূমিহীন কমিটির সভাপতি ইউপি সদস্য মোঃ শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন, সহ-সভাপতি আব্দুল মালেক, নোড়াকচক ভূমিহীন সংগ্রাম কমিটির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মহাতাব উদ্দিন, মোঃ ইসমাইল হোসেন প্রমুখ। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দেবহাটা পারুলিয়া মৌজায় খাস খতিয়ানে ৭৩টি দাগে ১ হাজার ৯শ ৬৭ বিঘা খাস জমি আছে। ২০০৮ সাল থেকে ভূমিহীনরা সেখানে বসবাস শুরু করে। সাবেক সফল স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ আ ফ ম রুহুল হক এমপি মহোদয়ের কাছে আমরা আবেদনের প্রেক্ষিতে তিনি মন্ত্রণালয় থেকে ভূমিহীনদের পক্ষে অনুমোদন করিয়ে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশে নোড়ার চারকুনি আবাদের ৬৪৯.৩০ একর জমি জল মহল শ্রেণী থেকে পরিবর্তন করে কৃষিযোগ্য জমিতে রূপান্তর করার জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট। তিনি সরেজমিনে তদন্দপূর্বক প্রতিবেদনটি সঠিক থাকায় উক্ত জমি জল মহল শ্রেণী থেকে পরিবর্তন করে কৃষিযোগ্য জমিতে রূপান্তর করে সেখানে বসবাসরত ভূমিহীনদের মাঝে বন্দোবস্ত প্রদানের সুপারিশ করে মাননীয় জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে প্রেরণ করে।
একই ভাবে জেলা প্রশাসক মহোদয় সুপারিশ করে মাননীয় বিভাগীয় কমিশনার বরাবর প্রেরণ করে। অপরদিকে ভূমিগ্রাসী স্বার্থান্বেষী মহল, দুইজন মুক্তিযোদ্ধাকে (মোঃ. আব্দুল মান্নান গাজী ও মো. আনছারুল মাহমুদ) বাদী বানিয়ে মহামান্য উচ্চ আদালতের আদেশের তথ্য গোপন করে যুগ্ম জেলা জজ ২নং আদালতে জনস্বার্স্বে স্বত্ব সাব্যস্ত খাস দখল ও তফসীল জমি হতে ভূমিদস্যুদের উচ্ছেদের জন্য গত ইং ২৩.১১.১৪ তারিখে মামলা দাখিল করে। যার মামলা নং- দেও; ১২২/১৪। মামলাটি দাখিলের ১দিন পরে অর্থাৎ ২৪.১১.১৪ তারিখের তথ্য গোপন করে এবং আদালতকে ভুল বুঝিয়ে তফসীল জমি রিসিভারে আবেদন করে রিসিভারের আদেশ করিয়ে নেয়। রিসিভার প্রদান করা হয়েছে সাতক্ষীরা জজ কোর্টের জিপি জনাব এড. গাজী লুৎফার রহমানকে (সংযুক্তি ৩, আরজী ও রিসিভার আদেশের কপি)। এ আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে জেলা জজ আদালত ২টি আপিল মামলা দায়ের করা হয়। যার নং দেও আপিল ১/১৫ ও ২/২০১৫, মামলা দুটি শুনানি অন্তে আর্থিক এখতিয়ার বহির্ভূত হওয়ায় এবং তৎকারণে গ্রহণযোগ্য বিবেচিত না হওয়ায় মামলা দুটি নথিজাত করলে মহামান্য সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে সিভিল রিভিশন করা হয়। সিভিল রিভিশন মামলা দুটি শুনানীঅন্তে মহামান্য হাইকোর্ট উক্ত কার্যক্রমের উপর স্ট্যাটাসকুয়ো আদেশ প্রদান করে। যার মামলা নং- সিভিল রিভিশন ১৮১৪/২০১৫ ও ২৩৫২/২০১৫। উক্ত মামলাদ্বয়ের মধ্য হতে ১ম মামলাটি মহামান্য সুপ্রিম কোর্টে চেম্বার জজ আদালতে নিন্ম আদালতের কার্যক্রম স্থগিতাদেশ প্রদান করলেও অপর মামলাটি এখন হাইকোর্টের আদেশে বহাল আছে। মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আদেশের প্রেক্ষিতে এবং ভূমিহীনদের রিসিভার বাতিলের আবেদনের প্রেক্ষিতে সাতক্ষীরা বিজ্ঞ যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালতে উভয় পক্ষের শুনানি অন্তে গত ইং তারিখে রিসিভার আদেশ বাতিল হয়ে যায়। এর পরেও ভূমিদস্যুরা প্রতিনিয়ত ভূমিহীনদের উচ্ছেদের পাঁয়তারা করছে। জিপি গাজী লূৎফার রহমান ভূমিদস্যুদের কাছ থেকে অর্থ নিয়ে ভূমিহীনদের উচ্ছেদের পায়তারায় এখনও লিপ্ত রয়েছে। যিনি রক্ষক, তিনিই ভক্ষক সেকারণে দুর্নীতিবাজ জিপি এড. গাজী লুৎফার রহমানের জিপি পদ থেকে অপসারণ করতে হবে। নোড়ারচক সহ সকল খাস জমি ভূমিহীনদের নামে বন্দোবস্ত করে দিতে হবে। ভূমিহীনদের নামে দায়ের করা সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। সর্বপরি ১৯৯৮ সালের ২৮ আগস্ট দেবহাটা দেবী শহর ফুটবল মাঠে আপনার (মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) কর্তৃক ঘোষিত সকল প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)