দেবহাটায় যুবক অপহরণ: গা-ঢাকা দিয়েছে স্বর্ণ পাচার চক্রের সদস্য স্বপ্না, হাসান ও পিন্টু

দীর্ঘদিন ধরে ভোমরা লক্ষীদাড়ি সীমান্ত দিয়ে চোরাচালানের সক্রিয় সিন্ডিকেটের সদস্যদের বড় চালান সাম্প্রতিক ধরা পড়ে বিজিবি সদস্যদের হাতে। আর সেই মামলার স্বাক্ষী হয় লক্ষীদাড়ি গ্রামের মৃত আশরাফ আলী অরফে হাসা পুটের ছেলে মনিরুল ইসলাম(২৫)। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে সোনা চোরাচালান চক্রের সদস্যরা। কিছু দিন যেতে না যেতে তাদের হাতে বলি হয় মনিরুল। নাটক সাজিয়ে ছলনাময়ী নারী স্বপ্না খাতুন ও অজ্ঞাত নারীকে দিয়ে অপহরণ করে মনিরুলকে। হত্যা করতে না পেরে মারাত্বক জখম করে ফেলে যায় তাকে। মৃত্যুর হাত থেকে রেহায় পেলেও মনিরুল সহ পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছে।

ঘটনার পর থেকে প্রতারকচক্রের সদস্য স্বপ্না খাতুন, হাসান, পিন্টুসহ সহযোগীরা গা ঢাকা দিয়েছেন। এছাড়া নিজেদের বাঁচাতে গোপনে বিভিন্ন কৌশলে বিভিন্ন নেতাদের সাথে দেন দরবার শুরু করেছেন।

উল্লেখ্য যে, প্রতারক প্রেমিকার ফাঁদে পড়ে যুবক অপহরণ ও নির্যাতনের ঘটনায় কয়েকদিন অতিবাহিত হয়েছে। নির্যাতিত অপহৃত যুবক মনিরুলকে ১০ঘন্টা পর চোখ বাধা অবস্থায় কুলিয়া এলাকা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্র্তি করা হয়। এঘটনা পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর গা ঢাকা দিয়েছে সিন্ডিগেট চক্রের মূল হোতা সাতক্ষীরা নাজমুল স্মরণীস্থ জেডি জুয়েলার্সের মালিক পিন্টু দাস, শাখরা বাজারের মারিয়া জুয়েলার্সের মালিক আবু হাসান (হৃদয়) ও পারুলিয়ার শাহাজুল ইসলামের মেয়ে স্বপ্না খাতুন এবং তার কথিত দুই বোন। এদিকে মনিরুলের ছিনতাই হওয়া পালসার মোটর সাইকেলটি উদ্ধার হলেও তার কাছে থাকা মোবাইল ও নগদ টাকা এখনো পর্যন্ত উদ্ধার হয় নি।

দক্ষিণ পারুলিয়া গ্রামের শাহাজুল ইসলাম খোকনের কন্যা স্বপ্না খাতুন (২০) সাতক্ষীরা সদর উপজেলার লক্ষীদাড়ী গ্রামের মৃত আশরাফ আলীর পুত্র মনিরুল ইসলাম (২৫) কে ফাঁসাতে একমাস পূর্বে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। সেই সুবাদে গত শুক্রবার মনিরুল ও স্বপ্না দেবহাটার বিভিন্ন স্থানে প্রাইভেট কারে ঘোরাঘুরি করে। ঐ সময় স্বপ্নার সাথে আরো দুইজন মহিলা ছিল। তারা স্বপ্নার সাথে ছিল বড় আপা পরিচয়ে। সারাদিন ঘোরাঘুরি শেষে পরবর্তীতে আবারো বেড়ানোর সময় নির্ধারণ করে যথাসময় মনিরুল স্বপ্নার সাথে দেখা করার জন্য চলে আসে পারুলিয়াতে। স্বপ্না মোবাইল ফোনে মনিরুলকে বদরতলা টু ব্যাংদাহ সড়কে দেখা করার জন্য বললে মনিরুল বিকাল ৪টার দিকে দেখা করতে গেলে কথা বলাবলির এক পর্যায়ে স্বপ্না কোন একজনের কাছে ফোন করলে, কিছুক্ষণ পর দ্রুত গতিতে একটি প্রাইভেট কার মনিরুলের পাশে এসে দাড়ায়। দাড়ানো মাত্রই ৪/৫ জন যুবক প্রাইভেট থেকে নেমে মনিরুলকে জোর পূর্বক প্রাইভেট কারে তুলে নিয়ে যায় এবং তার ব্যবহৃত পালসার মোটর সাইকেলটি ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

এসময় অপহরণ কারীরা মনিরুলের হাত, পা ও চোঁখ বেধে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে নির্যাতন করে প্লাস দিয়ে পায়ের নখ উপড়ে ফেলে। তাকে অচেতন ও চোঁখ বাধা অবস্থায় রাত দুইটার দিকে কুলিয়া সিদ্ধেরশ্বরী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। ঐ রাতে পুলিশ আহত অবস্থায় মনিরুলকে উদ্ধার করে। কিন্তু ঘটনার তিন দিন অতিবাহিত হলেও অপহরণ কারীদের কাউকে আটক করতে পারিনি পুলিশ। এদিকে এলাকার সচেতন মহলের দাবি স্বপ্না, হাসান ও পিন্টু দাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে আসবে আসল রহস্য। তাই ভূক্তভোগী পরিবারটি জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জোর দাবি জানিয়েছেন। এবিষয়ে দেবহাটা থানার সেকেন্ড অফিসার ইয়ামিন আলী জানান, মনিরুলের ভাই এর অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।

এ ব্যাপারে দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দ মান্নান আলী বলেন, মনিরুল ইসলাম এর ব্যাপারে থানায়য় এখনও কেউ লিখিত অভিযেযাগ করেন নি। পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরে আমরা বিসয়টি অনুসন্ধান করছি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)