দেবহাটার ফারিয়া হত্যাকারীদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি

সাতক্ষীরার আলোচিত শিশু হত্যা মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে সাংবাদিকদের মিথ্যে তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করিয়ে আসামিদের রক্ষার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে দেবহাটা উপজেলার পুষ্পকাটি গ্রামের মোঃ ফরহাদ হোসেনের স্ত্রী মোছাঃ সার্জিনা বেগম এই অভিযোগ করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত ২১ সেপ্টেম্বর দেবহাটা উপজেলার পুষ্পকাটি গ্রামের একটি পুকুর থেকে আমার শিশু মেয়ে ফারিয়া সুলতানা তমা(৪) এর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি আমার মেয়েকে হত্যা করে পুকুরে ফেলে দেয়। লাশ উদ্ধার হওয়ার পর থেকে ওই ব্যক্তিরা হত্যার ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে সাংবাদিকদের একের পর এক মিথ্যে তথ্য দিয়ে আমার স্বামীকে হত্যাকারী বানানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।

সার্জিনা বেগম বলেন, গত ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় আমার স্বামী ফরহাদ হোসেন শিশু মেয়ে তমাকে সাথে নিয়ে পার্শ্ববর্তী দোকান থেকে খাবার কিনে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা একই এলাকার ছিয়ামউদ্দিনের ছেলে জিয়ারুল ইসলাম, মৃত মান্নাফ সরদারের ছেলে লাল্টু, মৃত লিয়াকত সরদারের ছেলে রিপন, মৃত বজলু শেখের ছেলে কাদের, ইনতাজ সরদারের ছেলে সিরাজুল ইসলাম ও মৃত জোনাব সরদারের ছেলে শাহিদুল ইসলাম ফরহাদ হোসেনকে ডেকে পাশের একটি বাঁশবাগানে নিয়ে যায়। এসময় লাল্টুসহ অন্যান্যরা আমার স্বামীর কাছ থেকে মেয়ে তমাকে ছিনিয়ে নেয় এবং পিছন দিক থেকে স্বামীর মাথায় আঘাত করলে সে মাটিতে পড়ে যায়। আমার স্বামী ফরহাদ মারা গেছে ভেবে তাকে পার্শ্ববর্তী পুকুর পাড়ে ফেলে রেখে তারা চলে যায়। প্রায় ২ ঘণ্টা পর স্বামীর হুশ ফিরলে তার কাছে থাকা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে গুমরানি শুনে আমার মামা শশুর আবদুল আলিম ও নানী শাশুড়ি ফতেমা খাতুন মুখবাধা অবস্থায় ফরহাদকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এদিকে আমার মেয়ে তমাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। ২১ সেপ্টেম্বর একই এলাকার বাবু সরদার ও তার স্ত্রী নিহার পার্শ্ববর্তী পুকুরে গোসল করতে এসে মেয়ে তমাকে ভাসমান অবস্থায় দেখতে পান। এখবর শুনে আমার অসুস্থ স্বামী ফরহাদ হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে ঘটনা খুলে বলে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, উল্লেখিত আসামিরা আমার স্বামীর কাছ থেকে মেয়ে তমাকে কেড়ে নিয়ে ওই সময় পুকুরে ফেলে দিয়েছিল। এঘটনায় আমি নিজে বাদী হয়ে হত্যাকারী ৬ জনের নাম উল্লেখ করে দেবহাটা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করি। এতে তারা বেপরোয়া হয়ে উঠে এবং আমার ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিবে ও হত্যাসহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দিচ্ছে। আসামিরা প্রভাবশালী হওয়ায় আমার মেয়ে হত্যার সাথে জড়িত থেকেও এখনও পর্যন্ত তারা ধরা ছোয়ার বাইরে রয়েছে। অথচ হত্যাকারীরা সাংবাদিকদের মিথ্যে তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করিয়ে আমার স্বামীকে হত্যাকারী বানানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, হত্যাকারীরা মূলতঃ আমার স্বামীকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু মেয়ে সাথে থাকায় কোন প্রমাণ যাতে না থাকে সেজন্য তাকেও পানিতে ফেলে হত্যা করে। এই হত্যা মামলা থেকে রক্ষা পেতে আসামিরা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অপপ্রচার এবং হত্যাসহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দিচ্ছে। তিনি হত্যাকারীদের গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)