দুঃখ, জিয়ার বিচারটা করতে পারলাম না: প্রধানমন্ত্রী

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যায় জড়িত ছিল অভিযোগ করে তার বিচার না করতে পারার আক্ষেপের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জিয়াউর রহমান যেভাবে মারা গেছেন, সেটি তার অবধারিত পরিণতি ছিল বলেও মনে করেন বঙ্গবন্ধু কন্যা।

শোকের মাস আগস্টের প্রথম দিন কৃষক লীগ আয়োজিত রক্তদান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে এই কথা বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতার বাসভবন প্রাঙ্গণে এই আয়োজন হয়।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের জাতির জনককে সপরিবারে এই বাড়িতেই হত্যা করা হয়। তার দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় তারা বেঁচে গেছেন। আর ২১ বছর পর শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ফেরার পর তার পিতা হত্যার বিচার শুরু করেন। আর ২০১০ সালে আবার ক্ষমতায় আসার পর পাঁচ খুনির ফাঁসি কার্যকর হয়।

বঙ্গবন্ধু কন্যো বলেন, ‘তবে আমার দুঃখ একটাই, তার (জিয়াউর রহমান) বিচারটা করতে পারলাম না, তার আগেই সে মরে গেল।’

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় দেশের রাষ্ট্রপতি হওয়া জিয়াউর রহমানের শাসনামলে ১৯টি সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছিল। আর ১৯৮১ সালে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ অভ্যুত্থানে নিহত হন জিয়াউর রহমানও। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জিয়ার যা পরিণতি হয়েছিল তা তার অবধারিত।’

বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততার প্রমাণ হিসেবে আত্মস্বীকৃত খুনি কর্নেল ফারুক ও রশিদের বিবিসিতে দেয়া সাক্ষাৎকারের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

“তারা এটাও বলে, তাদের সাথে জিয়াউর রহমানের সম্পর্ক ছিল। এবং তারা জিয়াউর রহমানকে জানিয়েছিল এবং জিয়াউর রহমান বলেছিল, ‘এগিয়ে যাও’ এবং সম্পূর্ণ সমর্থন দিয়েছিল, বলেছিল তোমরা সফল হলে আমরা আছি।’

প্রখ্যাত সাংবাদিক অ্যান্থনি মারসাকাহানস বিবিসির হয়ে এই সাক্ষাৎকার দেন। বঙ্গবন্ধু কন্য বলেন, ‘তাদের (ফারুক, রশীদ) জিজ্ঞেস করেছে কেন তাকে হত্যা করেছে। তারা বলেছে, জনগণের কাছে যাতে সে (বঙ্গবন্ধু) জনপ্রিয়তা হারায় সে জন্য বহু চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তার জনপ্রিয়তা পাহাড়সহ ছিল। কিছুতেই তার জনপ্রিয়তা কমানো যায়নি। কাজেই তাকে হত্যা ছাড়া নাকি ওদের আর কোনো পথ ছিল না।’

জিয়াউর রহমানের শাসনামলে বঙ্গবন্ধু হত্যার আইনি বৈধতা দিয়ে জারি করা ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ এবং খুনিদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেয়ার কথাও তুলে ধরেন জাতির পিতার কন্যা।

‘একবার চিন্তা করে দেখেন আপনারা, বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বা দূতাবাসে চাকরি করে কারা? জাতির পিতার আত্মস্বীকৃত খুনিরা। তাদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিল জিয়াউর রহমান। কেন পুরস্কৃত করেছিল? জিয়া এই ঘটনায় সম্পূর্ণভাবে জড়িত ছিল বলেই এই খুনিদের পুরস্কৃত করেছিল।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)