তালা ডুমুরিয়ায় আধুনিক মাছ ও সবজি চাষে বিপ্লব
আধুনিক পদ্ধতির কার্ফ-গলদা মিশ্র চাষ বাজারজাতকরণ মাধ্যম সাবলম্বী হচ্ছে সাতক্ষীরার তালা ও ডুমুরিয়ার ১০ ইউনিয়নের প্রায় ৩ হাজার মৎস্য চাষী পরিবার। তালা, ডুমুরিয়ার মোট ১০ ইউনিয়নে ১ হাজার ৮ শ’পরিবার ইতিমধ্যে মাছ চাষের পাশাপাশি সাথী ফসল হিসেবে বিভিন্ন প্রকার সব্জি উৎপাদন করে বাড়তি মুনাফা আয় করে মূল লক্ষ বাস্তবায়নে এগিয়ে গেছে অন্যভাবে। আধুনিক এই চাষ পদ্ধতি অর্থনৈতিকভাবে তাদের সাবলম্বী করেনি পরিবর্তন ঘটিয়েছে ভাগ্যেরও।
তালার সদর,মাগুরা,খলিশখালী,জালালপুর ও ইসলামকাটি এবং ডুমুরিয়া উপজেলার মাগুরাঘোনা,আটলিয়া,শোভনা,খর্ণিয়া ও রুদাঘরা ইউনিয়নের প্রায় ২০০০ জন চাষী মৎস্য চাষের পাশাপাশি ঘেরের পাড়ে বিভিন্ন প্রজাতির সবজি চাষ করে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন করছে। এ পর্যন্ত প্রায় তাদের ১ হাজার ৮০০ জন চাষী ক্ষুদ্র উদ্যোক্তায় পরিণত হয়েছেন।
চাষীরা জানান, আধুনিক যন্ত্রপাতি ও বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করে বাড়িতেই তৈরি করছেন উন্নত মানের খাবার,ঘেরে বা পুকুরে ব্যবহার করছেন বায়োসিকিইরিটি নেট,মাছের রোগ-প্রতিরোধে প্রয়োগ করছেন প্রবায়োটিকসসহ আরো অনেক পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,উন্নত পদ্ধতিতে কার্প-গলদা মিশ্র চাষ ও বাজারজাতকরণের মাধ্যমে সফলতা অর্জন করেছেন ইউনিয়নের বারানগর গ্রামের শিবানী চক্রবতী,ধুকুড়িয়া গ্রামের শিতল ব্যানার্জীসহ আরা অনেকে। আধুনিক প্রযুক্তি বিষয়ক প্রশিক্ষণ,গুণগত মানসম্মত মাছের পোনা ও রেণু সংগ্রহ,প্রোটিন ও আমিষসমৃদ্ধ খাবার সরবারহ এবং নিয়মিত মাটি ও পানি পরীক্ষা নিশ্চিত করে উল্লেখযোগ্য হারে মাছের ফলন পেয়ে সফল হয়েছেন এসব মাছ চাষীরা। তাদের এ কাজে কারিগরি সহায়তাসহ সার্বিক তত্ত্বাবধান করছে সাতক্ষীরা উন্নয়ন সংস্থা (সাস)।
সফল মাছচাষী শিবানী জানান,পরিবারের আয়ের উৎস্য হিসেবে প্রায় ১৫ বছর ধরে তিনি মাছ চাষ করছেন কিন্তু ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটেনি এতটুকু কিন্তু ২০১৭ সালের এপ্রিলের শেষের দিকে । আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ও ঘেরের পাড়ে বাড়তি সবজি চাষ করে তার চৌদ্দ বিঘা জমিতে প্রায় দু’লক্ষ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা অর্জিত হয়েছে। তার বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ১২-১৫ হাজার টাকা। সারা বছর তার ঘেরের মাছ ও সবজি বিক্রি হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এবছরও আশানুরূপ মুনাফা পাবেন বলে বিশ্বাস এ চাষির। একই সাথে তিনি চলতি বছর কাজের স্বীকৃতি সরূপ পেয়েছেন মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে তালা উপজেলার সেরা গলদা চাষীর সম্মাননা।
অপর সফল মাছচাষী শিতল ব্যানার্জী জানান,কার্প-গলদা মিশ্র চাষের পাশাপাশি সাথী সবজি চাষ তিনি ঈর্ষণীয় সাফল্য পেয়েছেন।
এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সাস’র সমন্বয়কারী খান মোঃ শাহ আলম জানান,প্রকল্পের মাধ্যমে দীর্ঘ দিন যাবৎ স্থিতিশীল অবস্থার মাছ চাষীদের ভাগ্যোন্নয়ন তথা মুখে হাসি ফুটাতে পেরে তিনি নিজেও ভীষণ খুশী। তার বিশ্বাস,প্রকল্পটি অচিরেই মৎস্য উৎপাদনের উর্বর ভূমি তালা,ডুমুরিয়াছাড়াও প্রসারতা পাবে বিস্তীর্ণ জনপদে।