তালায় যৌতুকের টাকার জন্য ছেলে আর বউমাকে বাড়ী থেকে বের করে দিল বাবা

যৌতুকের টাকা এনে না দেওয়ায় ছোট বাচ্চাসহ ছেলে আর বউকে বাড়ী থেকে বের করে দিলেন ছেলের বাবা।  সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার আটারই গ্রামের ঘটনাটি এটি। এখন ছোট বাচ্চাকে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন মা সুমাইয়া খাতুন ও বাবা ইসমাঈল হোসেন।

জানা যায়, ২০১৬ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর আটারই গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে ইসমাঈল হোসেনের সাথে পার্শবর্তী জেয়ালা গ্রামের রবিউল মোড়লের মেয়ে সুমাইয়া খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর অনেকভালভাবে তাদের সংসার চলছিল। ইসমাঈল হোসেন ও তার স্ত্রীর মধ্যে কোন প্রকার অমিল বা অশান্তি লক্ষ করেনি প্রতিবেশিরা। তবে অশান্তি শুরু করে ইসমাঈলের বাবা আবুল কাশেম সরদার। শ্বশুর বাড়ী হতে যৌতুকের টাকা নিয়ে আসার জন্য। আবুল কাশেম ছেলেকে চাপ দিতে শুরু করেন। বাবার কথা মত ইসমাঈল শ্বশুর বাড়ীতে বিষয় জানালে গরীর দিনমজুর শ্বশুর খুব কষ্ট করে ৩০ হাজার টাকা দেন। ৩০ হাজার টাকা পেয়ে আবুল কাশেম বেশ কিছু দিন শান্ত ছিল। এরপর আবার শুরু হয় নানা ধরনের অত্যাচার। ছেলেকে পুনঃরায় শ্বশুর বাড়ি হতে যৌতুকের টাকা নিয়ে আসার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে ছেলে ইসমাইল হোসেন শ্বশুর বাড়ীতে আর টাকা চাইতে পারবে না বলে বাবাকে জানিয়ে দেয়। ছেলের কথা শুনে ভীষণ রেগে যায় আবুল কাশেম। এরপর ৮ মাস বয়সী বাচ্চাসহ ছেলে ও বউমাকে বাড়ী থেকে বের করে দেন আবুল কাশেম। এ সময় মৌখিকভাবে ছেলেকে তাজ্যপুত্র করেছেন তিনি।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ইসমাঈল হোসেন বলেন, আমার বাবা ভীষণ লোভী ও দুষ্ট প্রকৃতির মানুষ। আমাকে ভীষণ চাপের মুখে রেখে আমার শ্বশুর বাড়ী থেকে এর আগে যৌতুকের টাকা আনতে বাধ্য করেন। বিষয়টি নিয়ে আমি বেশ লজ্জিত ছিলাম। এরপর আমার বাবা আবার টাকা চাইতে বলে তখন আমি নিষেধ করলে সংসারে নানা ধরনের অস্থিতিশীলতা ও অশান্তি সৃষ্টি করে। ফলে বাধ্য হয়ে গণ্যমান্য লোকের কাছে আমি শালিশ দেয়। সেখানে আমার বাবাকে এমন কথা না বলতে নিষেধ করেন শালিশের লোকজন। কিন্তু কিছুদিন পর আবার অশান্তি সৃষ্টি করেন। আমাকে শ্বশুরের কাছে টাকা চাইতে বলেন। আমি নারাজ হওয়ায় আমার ছোট একটা বাচ্চাসহ আমাকে আর আমার স্ত্রীকে বাড়ী থেকে বের করে দিয়েছেন। এ সময় তিনি আমাকে তাজ্যপুত্র করেছেন বলে জানান। এখন আমি রাস্তায় রাস্তায় ঘুরতেছি। আমি বাড়ীতে ফিরতে চাই।

তবে এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আবুল কাশেম সরদারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।

তালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাজিয়া সুলতানা বলেন, অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া তিনি আদালতের শরণাপন্ন হতে পারেন।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)