ডায়রিয়ার সমাধান ঘরেই!

ঠাৎই আপনি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন! ঔষধ ও স্যালাইন ঘরে নেই? ভাবছেন কি করবেন? আপনার ঘরেই তো রয়েছে ডায়রিয়ার সমাধান। খাদ্যে বিষক্রিয়া বা ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার কারণে আপনি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন। অনেকেই আবার ক্রনিক বা ক্রোহেন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হন। তাদের অবশ্যই শিঘ্রই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। তবে হঠাৎই ডায়রিয়ার কবল থেকে রক্ষা পেতে কয়েকটি ঘরোয়া টিপসই আপনার জন্য যথেষ্ট-

তরল খাবার খেতে হবে-

ডায়রিয়া কিন্তু মুহূর্তেই মারাত্ম আকার ধারণ করতে পারে। তাই অতিরিক্ত তরল খাদ্য গ্রহণ শুরু করুন। আমেরিকান কলেজ অফ গ্যাস্ট্রোন্টারোলজি’র প্রাক্তণ সভাপতি লরেন্স শিলার বলেন, ‘সাধারণ ডায়রিয়াতে শুধু পানিই ঠিক আছে। যদি ডায়রিয়া গুরুতর হয়, তবে আপনি পানির সাথে লবন যোগ করুণ। আপনার ডাইরিয়া যদি অতিরিক্ত না হয় তবে আপনার জন্য সুপ বা সাধারন পানিয় গ্রহন যথেষ্ট হতে পারে।

সবসময় পানিশূন্যতার লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন থাকুন, যেমন- খুব পিপাসা, পস্রাবে জ্বালা-পোড়া, গাঢ় রঙের প্রস্রাব, মাথা ঘুরানো , ক্লান্তি ইত্যাদি। শিশুদের ক্ষেত্রে চোখে পানি ছাড়াই কান্না করা বা শুকনো মুখ, শুকনো চোখ বা গাল এবং তিন ঘন্টার জন্য কোন ডায়াপার ভিজে না হওয়া। এ ব্যাপারগুলো হতে পারে ডিহাইড্রেশনের লক্ষণ।

ভারী নয় হালকা খাবার গ্রহণ করুন-

এসময় হালকা খাবার খেলে আপনার শরীর তা থেকে পুষ্টিগুণ সহজে গ্রহণ করতে পারে যা আপনাকে শরীরের পানি ধরে রাখতে সাহায্য করে। অনেকেরই ধারণা ডায়রিয়া হলে ভাত, কলা, টোস্ট খাওয়া উচিৎ। তবে এ ধারণা সঠিক নয়।

কলায় অনেক পটাশিয়াম থাকে যা কি-না ডাইরিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি করতে পারে। চর্বিযুক্ত এবং মসলাযুক্ত খাবার থেকে দূরে থাকুন। পাশাপাশি অ্যালকোহল থেকেও দূরত্ব রাখুন। আর যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি ভালবোধ করেন ততক্ষণ পর্যন্ত এক বারে বেশি খাবারের পরিবর্তে অল্প অল্প খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন, যেহেতু আপনার পাচনতান্ত্রিক প্রক্রিয়া দূর্বল। ব্যায়াম এড়িয়ে চলুন। বেশি কষ্টকর ব্যায়াম আপনার পানি স্বল্পতার কারণ হয়ে ওঠে।

ডঃ ডার্ক বলেন, ‘এটি ম্যারাথনের জন্য প্রশিক্ষণ শুরু করার সময় নয়। আপনার শরীরের কিছু বিশ্রাম প্রয়োজন। আপনি দৈনিক কার্যক্রম করতে পারেন, কিন্তু অতিরিক্ত ক্যালোরি ব্যয় করবেন না।’

চা পান করুন-

ডায়রিয়ার জন্য সহজ প্রতিকার হিসেবে ক্যামোমিল চা সেবন করেন অনেকেই। কিন্তু গবেষণায় জানা গেছে ক্যামোমিল চা, কফি ডাইরিয়ার প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি করে। অন্যদিকে লেবু চা পেটের অসুখের জন্যে উপকারি।

আদা ব্যবহার করুন

মানুষ হাজার হাজার বছর ধরে পেটের সমস্যা প্রতিকারের উপায় হিসেবে আদাকে ব্যবহার করছেন। তবে ডায়রিয়া থেকে বাঁচতে এটি সম্ভবত আরও কার্যকরী। কিছু মানুষ মনে করেন যে আদা আসলে পেট খারাপের কারণ এবং অন্যান্য পাচক সমস্যা যেমন গ্যাস বা হৃদরোগের কারণ হতে পারে। আপনার রক্ত যদি পাতলা হয় তবে আদা ব্যবহার সম্পর্কে আপনার ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করুন। কোনও নতুন ঔষধ বা সম্পূরক গ্রহণ করার আগে গর্ভবতী মহিলাদের সবসময় স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সাথে পরামর্শ করা উচিৎ।

পুষ্টিগুণ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করুন-

প্রো-বায়োটিক এক ধরনের জীবাণু যা ডায়রিয়া সহ বিভিন্ন ধরণের অসুস্থতার উপশমে সাহায্য করে।শরীরে ভালো ব্যাক্টেরিয়া প্রবেশের মাধ্যমে আপনি আপনার পরিপাক তন্ত্রের সুষম পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে পারেন।গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, প্রো-বায়োটিকগুলো প্রায় এক দিনের মধ্যে ডায়রিয়া হ্রাস করতে সাহায্য করে। তবে সব কথার শেষ কথা, আপনার ডায়রিয়া তীব্র হওয়ার আগেই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিৎ।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)