চেয়ারম্যানের ডাকে সালিশে যেয়ে কলারোয়ায় জখম ছাত্রলীগ নেতা!

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাবেক চেয়ারম্যানের ডাকে সালিশে যেয়ে সন্ত্রাসী হামলায় রক্তাক্ত জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কলারোয়া সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাসুদ পারভেজ হ্নদয় (২০)। সে উপজেলার ধানঘোড়া গ্রামের জাহান আলীর ছেলে ও কলারোয়া সরকারী কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র এবং ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি।

হামলার ঘটনাটি মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার কাজীরহাট বাজার সংলগ্ন আলমগীরের সারের দোকানের সামনে ঘটে। এতে মারাত্বক জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাসুদ পারভেজ হৃদয়।

হাসপাতালে ভর্তি আহত সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাসুদ পারভেজ হ্নদয় জানান, তুচ্ছ ঘটনায় জের ধরে প্রথমে বিকালে কাজীরহাট বাজারের ব্রাক অফিসের সামনে সন্ত্রাসীরা একই এলাকার ইমান পোল্ট্রির ছেলে তরিকুল ইসলাম (১৯), ইমতিয়াজ হোসেন (২০), নূর হোসেন (১৮) ও আলী হোসেনের ছেলে সেনাবাহিনীতে চাকরীরত রাসেল (২০) এর সাথে কথা কাটাকাটি শুরু হয়।

তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে তারা হ্নদয়কে দেখা নেয়ার হুমকী দিয়ে আশে পাশে থাকা লোকজন সমাগম করার জন্য ডাকতে থাকেন। খবর পেয়ে স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সম মোরশেদ আলী রাত সাড়ে ৯টার দিকে উভয় পক্ষকে ডেকে বিষয়টি মিমাংসা করার জন্য আহত হ্নদয় ও তার মাকে আলমগীরের সারের দোকানে আসতে বলেন।
সেই মোতাবেক তারা উপস্থিত হওয়ার সাথে সাথে নামধারী সন্ত্রাসী তরিকুলের হাতে থাকা পেপসির বোতল এবং ইমতিয়াজ ও রাসেলের হাতে থাকা লোহার রড দিয়ে সম মোরশের আলীর মদদে সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাসুদ পারভেজ হৃদয়ের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে এ্যালেপাতারী মারপিট ও রক্তাক্ত জখম করে কপাল ফাটিয়ে দেন।

ওই রাতেই রক্তাক্ত অবস্থায় আহত হ্নদয়কে স্থানীয়রা উদ্ধার করে সরকারী হাসপাতালে নিয়ে আসেন এবং কপালে ৪টার সেলাই দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

খবর পেয়ে উপজেলা সৈনিকলীগের সভাপতি রুবেল মল্লিক ও সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ হোসেন সম্রাটসহ নেতৃবৃন্দ হাসপাতালে ছুটে যান এবং আহত কলেজ ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি মাসুদ পারভেজ হ্নদয়ের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেন। ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তারা জানান।

আহত সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাসুদ পারভেজ হ্নদয়ের বিষয়ে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি এসএম আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক শাকিল খান জর্জের সাথে কথা হলে তারা বলেন, কলেজ কমিটি জেলা ছাত্রলীগের আন্ডারে, তাদের কিছু করার নেই। তাছাড়া আহত ব্যক্তির পক্ষ থেকে তাদের কাছে কেহ অভিযোগ করেনি। খোঁজ খবর নিয়ে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পুলিশের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তারা জানান।

এদিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ মারুফ আহম্মেদ জনির সাথে কথা হলে তিনি ভিন্ন মত পোষন করে বলেন, শুনেছি যখন অবশ্যই আহত ছাত্রলীগ নেতাকে দেখতে হাসপাতালে যাবেন। ছাত্রলীগ নেতাকে আহত করায় জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আওয়ামী নেতা সামনে ছাত্রলীগ নেতার উপর সন্ত্রাসী হামলা আসলেই এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে এমন নেক্কার জনক ঘটনার তীব্য নিন্দা জানায়।

এদিকে আহত সরকারী কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাসুদ পারভেজ হ্নদয়ের বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদিকুর রহমান সাদিকের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ছাত্রলীগের কোন নেতাকর্মীকে যদি কেহ আহত করেন তাহলে বরদাস্ত করা হবে না। প্রয়োজন হলে সাতক্ষীরার ৭টি উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করা হবে এবং ঘটনার তীব্য নিন্দা জানান।

এবিষয়ে সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সম মোরশেদ আলী বলেন, আমি মিমাংসার জন্য তাদের দুইপক্ষকে ডেকেছিলাম। দুই পক্ষের সবাই আসলেও সজিব সেখানে উপস্থিত হয় নি। হামিদ চেয়ারম্যানের নির্দেশে তাকে মুজিবর আসতে দেয় নি। পরে হৃদয় আমার এখান থেকে চলে যাওয়ার পথে তার উপর হামলা করা হয়েছে। তার উপর হামলা খুবই দুঃখজনক। আমি তাদের দুই পক্ষের সবাইকে ভালবাসি। আমাদের এখানে গ্রুপিং এর কারণে একটি পক্ষ হৃদয় এর উপর হামলার ঘটনায় আমাকে জড়াচ্ছে।

কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্র্মকর্র্তা মারুফ আহমেদ বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি তবে এ ব্যাপারে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)