ক্রয়কৃত সম্পত্তি উদ্ধারের দাবিতে একজন ভুক্তভোগীর সংবাদ সম্মেলন

শহর প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরায় সংখ্যালঘুর দোহাই দিয়ে অবৈধভাবে দখল থেকে ক্রয়কৃত সম্পত্তি উদ্ধার ও ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষার জন্য পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন একজন ভুক্তভোগী। শনিবার দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান সাতক্ষীরা তালা উপজেলার খেশরা গ্রামের সাজ্জাত আলী মোড়লের ছেলে মোঃ নজরুল ইসলাম মোড়ল।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিগত ১৯৯২ সালের ৯ জুন ২৭৯২ নং কোবলা দলিল মূলে মাঠ পর্চা তজদিক এর বুজারাত ৪৯৩ ও ৪৯৪ নং খতিয়ান হতে প্রস্তুতের পরে পদ্মারাণী দাশ ও তার দুই ছেলে জগদিশ এবং রাম কৃষ্ণের কাছ থেকেএস এ খতিয়ান ১৫১৪ এর ৭২৪ দাগে ৮২ শতকের মধ্যে ৬৬শতক জমি আমার নিজের ও মৃত শরিতুল্লাহ সানার ছেলে শওকাত আলী সানার নামে ক্রয় করি। ৯৩ সালের ৩০ জুন ৩৩৯৮ নং কোবলা দলিল মূলে পদ্মারাণী দাশের কাছ থেকে ডিপি ১০৩৪ খতিয়ানের ১ একর ৫৫ শতকের মধ্যে ৩৩ শতক জমি আমার ও ছেলে মনিরুল ইসলাম পলাশের নামে ক্রয় করি। ৯৩ সালের ২৫ নভেম্বর পদ্মা রাণীর কাছ থেকে ৫৪২৩ নং কোবলা দলিল মূলে মোঃ এনায়েত আলী সানার স্ত্রী মোছা হোসনেয়ারা খাতুন ৪৯৩ বুজারাত খতিয়ানে লিখিত ১ একর ৫৫শতক জমির মধ্য থেকে ৯টি দাগের মধ্যে ৬৬শতক, ৯৩ সালের  ১৫ মার্চ ১৪৮৮৪ নং কোবালায় ওই পদ্মারাণীর কাছ থেকে ৪৯৩ বুজারত খতিয়ান হতে ১ একর ৫৫শতক জমির মধ্য হতে ৩৩ শতক হোসনে আরা ও জেন্নাতুন্নেছা ক্রয় করে। মোট ৪টি দলিলে ৪টি এস এ খতিয়ানের ১০টি দাগে ২ একর ৯০ শতক সম্পত্তির মধ্যে ১ একর ৯৮ শতক সম্পত্তি ক্রয় করে আমরা পূর্বপর শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখলে আছি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ১৯৭১ সালে ইসলামকাটি রেজিস্ট্রি অফিস পুড়ে যাওয়ার পর সুযোগ বুঝে খেশরা গ্রামের মৃত কালিপদ দাশের ছেলে বিশ্বনাথ ওই সম্পত্তির একটি জাল দলিল সৃষ্টি করে তা দখল করার চেষ্টা করে। ফলে উক্ত সম্পত্তি নিয়ে পদ্মারানীর সাথে বিশ্বনাথের ও সরকারের সাথে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছিল। এ বিষয়ে তালা সহকারী সিনিয়র জজ আদালতে ১৪৩/৮৫ নং মামলা দায়ের করেন পদ্মারানী। উক্ত মামলায় ৯১ সালের ২৮ নভেম্বর রায় হয় এবং ওই বছরের ১ ডিসেম্বর দোতরফা সুত্রে শুনানী ডিক্রি হয়। উক্ত মোকাদ্দমায় বিশ্বনাথ দাশ ১২ নং বিবাদী হিসাবে পরাজয় বরণ করেন এবং সরকার পক্ষও হেরে যায়। পরবর্তীতে সরকার ও বিশ্বনাথ দাশ সাতক্ষীরা জজ আদালতে ৪৭/৯২ নং আপিল মামলা দায়ের করেন এবং ৯৮ সালের ৩০ মার্চ পুনরায় বিশ্বনাথ ও সরকার পরাজিত হয়। ২০০০ সালে সিভিল রুল মামলা নং- ৪৭/৯২ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে। অন্যদিকে ২০১২ সালে সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা মতে কোন আদালতে অর্পিত সম্পত্তি সম্পর্কে কোন মোকদ্দমা চলিতে পারে না মর্মে গেজেট প্রকাশ হওয়ার পর বিশ্বনাথ বাদি হয়ে সরকারকে  বিবাদি করে সাতক্ষীরা জেলা জজ আদালতে ভি,পি নং- ১৩৪৬/১২ নং অবমুক্ত মামলা দায়ের করে।
এরপর আমরা গত ৩ জানুয়ারি উক্ত সম্পত্তিতে শান্তি শৃঙ্খলা বজার রাখার জন্য অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পি ৫৭/১৮ মামলা করলে আদালত উক্ত সম্পত্তিতে শান্তি শৃঙ্খলা বজার রাখার জন্য ১৪৫ ধারা জারি করেন। গত ৮ জানুয়ারি উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে পুলিশ নোটিশ জারি করেন এবং শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য নির্দেশ দেন। কিন্তু ১৪৫ ধারা অমান্য করে গত ১৬ জানুয়ারি থেকে খেশরা গ্রামের নিমাই কুমার দাশ, মনু দাশ, প্রদীপ কুমার দাশ, সন্তোষ কুমার দাশ এবং আটঘরা গ্রামের সতীশ চন্দ্র দাশ উক্ত সম্পত্তিতে গিয়ে জোরপূর্বক পাকা ঘর নির্মাণ শুরু করে। বিষয়টি পুলিশকে জানালে তারা পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে লুকিয়ে পড়ে আবার পুলিশ চলে যাওয়ার পর পুনরায় কাজ শুরু করে।
অন্যদিকে গত ১৭ জানুয়ারি নিজেদের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দোহাই দিয়ে আইন ও আদালতের সহযোগিতা পাওয়ার জন্য তারা একটি মিথ্যে সংবাদ সম্মেলন করে। আমি উক্ত সংবাদের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তিনি বিশ্বনাথ দাশ কর্তৃক অবৈধভাবে দখলের হাত থেকে তার ক্রয়কৃত সম্পত্তি উদ্ধার এবং মিথ্যে ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা পেতে সাতক্ষীরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)