কালিগঞ্জে মহিলাদের বোকা বানিয়ে স্বর্ণ অলংকার হাতিয়ে নেওয়ায় ভুয়া কবিরাজের জরিমানা

মো: আরাফাত আলী:
সাতক্ষীরা কালিগঞ্জে ঝাঁরফুকের নাম করে সাধারণ মহিলাদের বোকা বানিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার স্বর্ণ অলংকার হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মঙ্গলবার বিকালে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা বিচার করে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে এক ভুয়া কবিরাজকে। সে উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের দুদলী গ্রামের বাহার আলী গাজীর ছেলে সাইফুল ইসলাম (৪৫)।

শ্যামনগর উপজেলার ইশ্বরীপুর ইউনিয়নের আবাদচন্ডীপুর গ্রামের ওলিউরের স্ত্রী ও দুদলী গ্রামের মৃত আব্দুল ওহাবের মেয়ে রুবির নালিশের প্রেক্ষিতে এই বিচার করেন বিচারকরা। রুবি তার মাদকাসক্ত ছেলের ভাল করার জন্য গত চার মাস আগে সাইফুলের কবিরাজের নিকট নিয়ে আসলে ঝারফুক দেওয়ার কথা বলে তার নিকট থেকে ২টি স্বর্ণের গলার চেইন,১ জোড়া কানের দুল নিয়ে নেয় যার মুল্য আনুমানিক ৫০ হাজার টাকা।
তদবীর দেওয়ার নামে দুদলী গ্রামের জনৈক বারীর স্ত্রীকে কবিরাজ বলেন ১ টি স্বর্ণের চেইন,একজোড়া কানের দুল ও হাতের রুলি নিয়ে আসেন তিনি ওই স্বর্ণ দিয়ে তদবীর করে দিবেন তারপর রান্না ঘড়ের চুলার ভিতর পুতে রাখতে হবে। তার কথামত বারীর স্ত্রী সেটাই করেন পরবর্তীতে ভুয়া কবিরাজ সাইফুল যেয়ে গভীর রাতে ওই স্বর্ণ অলংকার চুরি করে নেন। তারা স্থানীয়দের গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের নিকট অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় ইউপি সদস্য উপস্থিতিতে জনৈক জিএম মামুন ঘটনার সত্যতা পেয়ে বিচার করে কবিরাজ সাইফুলকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

এছাড়া পাশ্ববর্তী এলকার ছদ্দনাম আলেয়া বেগম নামের এক ব্যাক্তি অভিযোগ করে বলেন গত কয়েক মাস আগে দ্রুত বিয়ে হওয়ার জন্য তার নাতনীকে নিয়ে গুণিনের বাড়িতে যান তদবীর করার জন্য কিন্তু গুণিন তদবীর দেওয়ার নামে তার নাতনীকে ঘরের ভিতরে নিয়ে জ্বীন আছে তার দেহে এজন্য তাকে বিবস্ত্র করে তদবীর করেন।

স্থানীয় বাহার আলী গাজী,নিরালা পারভীন ও রোকেয়া বেগম জানান, দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে সাইফুল জ্বীন ভূত দুর করন সহ বিভিন্ন প্রকার রোগের তদবীর দিয়ে আসছে। কেউ কোনদিন অভিযোগ করেনি স্থানীয়দের প্রতারণা করে মহিলাদের নিকট থেকে স্বর্ণ অলংকার নেওয়ার কারণে বিচারে তাকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। তবে টাকা নগদ দিতে না পারায় তার নিকট থেকে ষ্ট্যাম্প করে নিয়েছে বিচারক মামুন।

ভূয়া কবিরাজ সাইফুলের নিকট জানতে চাইলে তিনি ঘটানার সত্যতা স্বীকার করে বলেন ,স্বর্ণ অলংকার বিক্রি করে খেয়ে ফেলেছে এজন্য ৩ মাসের মধ্যে ৭০ হাজার টাকা তিনি পরিশোধ করবেন বিচারকদের নিকট।
এ বিষয়ে বিচারক জিএম মামুন বলেন তার নিকট থেকে ষ্ট্যাম্প করে নেওয়া হয়েছে টাকা না দিলে আইনের আশ্রয় নেওয়া হবে।

ইউপি সদস্য হেমায়েত হোসেন ছোট বাবু ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন ,বিচার তিনি করেননি তবে উপস্থিত ছিলেন।

কালিগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাজীব হোসেন বলেন, এবিষয়ে তিনি অবগত নন তবে অভিযোগ পেলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানান।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)