কালিগঞ্জের কামার শিল্পীরা ঈদের আগের দিনে ব্যস্ত সময় পার করছেন

মুসলিমদের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আযহা আর মাত্র একদিন পরেই পালিত হবে । মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সন্তুষ্টি লাভের আশায় পশু কোরবানি দেয়ার মাধ্যমে দিনটি অতিবাহিত করবেন মুসলিমরা । আর এদিন পশু জবাই থেকে শুরু করে মাংস কাটা পর্যন্ত দা, বটি, চাপাতি ও ছুরি একটি অন্যান্য উপকরণ হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। এই প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো তৈরি থেকে শান দেয়ার কাজটি কামার শিল্পে জড়িতরাই করে থাকে ।
তাই ঈদ উল আযহাকে সামনে রেখে তাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায় অনেকখানি। ঈদকে সামনে রেখে কালিগঞ্জ উপজেলায় কামারদের ব্যস্ত সময় কাটছে এখন। অন্যান্য সময়ের তুলনায় তাদের কাজের চাপও এখন অনেক বেশি। দিনরাত বিরামহীন ভাবে কাজ করছেন তারা। শেষ মুহূর্তের ব্যবসায়িক কর্ম ব্যস্ততায় সময় পার করছেন এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কর্মকাররা। তাদের সাথে কথা বলে জানাযায় , ঈদুল আযহা এলেই তাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এতে অনেক খুশি তারা। তবে ঈদ ছাড়া বাকি দিনগুলোতে তাদের তেমন একটা ব্যস্ততা থাকে না বললেই চলে। বছরের অন্যান্য সময় তাদের দিনে ৩/৪ শত টাকা আয় হয় আবার কোনা কোন দিন হয়ই না। সে তুলনায় এখন আয় কয়েকগুণ বেশি হচ্ছে। তাদের এ কাজে কয়লার চাহিদা রয়েছে প্রচুর। বর্তমানে কয়লা পাওয়া খুবই কঠিন, তাছাড়া দামও বেশি। পাশাপাশি লোহার দামও বেশি। সরকার সুলভ মূল্যে সরঞ্জামাদী ক্রয়ের নীতিমালা সহ আর্থিক সহযোগিতায় ও ঋণের ব্যবস্থা করে দিলে ব্যবসায়ীক ভাবে সফলতার মুখ দেখা যেত।
কালিগঞ্জে বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, কেউ তৈরি করছে দা, কেউ বা তৈরি করছে চাপাতি আবার কেউ কেউ তৈরি করছে ছুরি। আবার কেউ পুরাতনগুলোর শান দিচ্ছেন এবং নতুনগুলো সারিবদ্ধভাবে দোকানের সামনে সাজিয়ে রেখেছেন বিক্রির উদ্দেশ্যে। কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণপুর, কোমরপুর, শ্রিরামপুর, নেংগী, বালিয়াডাঙ্গা, চাচাই, কুশলিয়া, নলতা, সাইহাটি, রতনপুরের কর্মকাররা জানান,
,নতুন চাপাতি ৩৫০/৪৫০ টাকা থেকে ৫০০টাকা, দা ৩০০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা, চাকু ৮০ টাকা থেকে ১০০টাকা, খুন্তি ৪০ টাকা, শাবল ১৫০থেকে ২০০,হাতা ৬০ টাকা থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছি।
আরেক কামার বলেন, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে আমাদের ব্যবসা এখন খুব ভালো চলছে। এ ঈদকে সামনে রেখে আমরা মোটা অংকের টাকা বিনিয়োগ করে থাকি এবং সেখান থেকে উপার্জিত অর্থে আমরা সারা বছর সংসার চালাই। তাই এখন সারাদিন সারারাত ধরে আমরা পরিশ্রম করে যাচ্ছি। এতে আমাদের উপার্জনও মোটামুটি ভালই হচ্ছে।
এদিকে এলাকার কোরবানীরা ও সমানতালে এখন ব্যস্ত।দা-,বটি,চাপাতি, ছুরি কেনার জন্য, তবে নতুনের চাইতে তারা পুরানো দা ছুরি শান দিয়ে নতুন করে তোলার কাজে বেশি আগ্রহ নিয়ে এখন ভিড় জমাচ্ছেন কামারের দোকানে।এ সময় দোকানে দা,বটি শান দিতে আসা আব্দুল মাজেত বলেন, কামার শিল্পদের কাজের নির্দিষ্ট কোন মূল্য তালিকা না থাকার কারণে তারা নিজেদের ইচ্ছে মতো দাম নিচ্ছে।
কালিগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন দোকানে কর্মরত কর্মকার শ্রমিকরা জানান, অন্যান্য পেশার মতো আমাদের কোন সংগঠন না থাকায় আমরাও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা হতে বঞ্চিত হচ্ছি।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)