কালিগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা সোলায়মান হত্যাকান্ডে জড়িত রুপা গ্রেফতার
সাতক্ষীরা কালিগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা সোলায়মান গাজী হত্যা মামলায় বহুল আলোচিত মক্ষীরানি মাজিয়া আক্তার রুপাকে গ্রেফতার করেছে সিআউডি। বৃহস্পতিবার রাত আটটার দিকে তাকে তার নিজ বাড়ি সাতক্ষীরা শহরতলীর দহকুলা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় গ্রেফতারকৃত রুপা সোলায়মান হত্যার সঙ্গে নিজেকে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে বিচারিক হাকিম রাজীব রায় এর কাছে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৯ নভেম্বর দিবাগত রাত ৮টার দিকে সন্ন্যাসীর চকের সাহেব আলীর চায়ের দোকান থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে রাতের কোন এক সময়ে আশাশুনি উপজেলার কৈখালী গ্রামের ভবতোষ মন্ডলের বাড়ির সামনে পানির ট্যাঙ্কির নীচে সোলায়মানকে জবাই করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ভাই সামিউল্লাহ গাজী পরদিন ওহাব আলী পেয়াদাসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে আশাশুনি থানায় একটি হত্যা মামলা(জিআর-২১২/১৭) দায়ের করে।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নিউটন দত্ত জানান, চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল উপপরিদর্শক নিউটন কুমার দত্ত (অর্গানাইজ ক্রাইম) তদন্ত ভার পান। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে হত্যাকান্ডে জড়িত দহকুলা গ্রামের মক্ষীরানি রুপা খাতুনকে তার বাড়ির এলাকা থেকে গ্রেফতার করে শুক্রবার সন্ধ্যায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি করানো হয়। জবানবন্দিতে আজাহারুল তার সহযোগীকে সাতক্ষীরায় পাঠিয়ে ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে আশাশুনির কৈখালীতে নিয়ে যেয়ে কিভাবে সোলায়ানকে ইয়াবা ও জুসের মাধ্যমে নেশা জাতীয় জিনিস পান করিয়ে অবৈধ মেলামেশা করার পর জবাই করে হত্যা করে তার বিস্তারিত বর্ণনা দেয়।
সোলায়মান হত্যার পর আজাহারুল তাকে নিয়ে আকে বন্ধুর শ্বশুর বাড়ি গোদাড়ায় যেয়ে স্বামী- স্ত্রী পরিচয় দিয়ে রাত কাটায়। সকালে আজাহারুলসহ তার সকল সহযোগী মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেয়। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর আদালতে আজাহারুলের রিমান্ড শুনানির জন দিন ধার্য আছে। রুপা খাতুনের জবানবন্দির পর এ হত্যাকান্ডের নতুন মোড় উন্মোচিত হতে চলেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে অনেক কিছু বলা যাচ্ছে না।
তবে রুপা খাতুন একজন দেহ ব্যবসায়ী হিসেবে বহু প্রভাবশালী মানুষকে প্রেমের ফাদে ফেলে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা লুটে নিয়েছেন বলে জানান ওই তদন্ত কর্মকর্তা। এসব ঘটনায় রুপা খাতুনের বিরুদ্ধে থানায় কয়েকটি মামলা রয়েছে।
তবে সাতক্ষীরা কোর্ট গারদে রুপা খাতুন জানান, তার এলাকার একজন আইনজীবী ও পিপির পরামর্শ মত এক হত্যাকারী সাতক্ষীরা সদরের লক্ষীদাড়ি গ্রামের মোমিন মিস্ত্রীর ছেলে ভাড়ায় চালিত মোটর সাইকেল চালক ও মাদক ব্যবসায়ী বাবর আলী মিস্ত্রীর সহযোগিতায় ভারতে চলে যায়। ওই আইনজীবী তাকে বিভিন্নভাবে খরিদ্দার ঠিক করে দিয়ে থাকেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে তিনি চেনেন না বলে জানান।