কলারোয়ায় বেপরোয়া ট্রাক্টর,ভোগান্তিতে জনগন,তামাসায় প্রশাসন!

জাহিদ হোসাইন:
সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার অভ্যন্তরে বন্ধ হচ্ছে না ট্রাক্টর। দিনেরপর দিন বেড়ে চলেছে ট্রাক্টরের সংখ্যা। পিচের রাস্তা পরিণত হচ্ছে মাটির রাস্তায়। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিরাপদে যেতে পারছেনা স্কুলে, মহিলারা সব সময় থাকছে আতঙ্কে।বাড়ছে শব্দ ও বায়ু দূষণ। নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। আর তামাসা দেখছে প্রশাসন। পৌর মেয়র আক্তারুজ্জামান বিএনপি নেতা হওয়ায় তার ছত্রছায়ায় বিএনপির ক্যাডার বাহিনী এ কাজ করে চলেছে দিনের পর দিন। আর বসে বসে সরকারি বেতন নিয়ে জনগনের ভোগান্তিতে মজা লুটছে কলারোয়া উপজেলা প্রশাসন। তারা দেখেও কিছু না দেখার ভ্যান করছে। অফিসে বসে আঙুল চোসা আর মাসে মাসে ট্রাক্টর মালিক ও ভাটা মালিকদের কাছ থেকে গুনে গুনে টাকা নেওয়া ছাড়া কোন কাজ নেই এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় সচেতন মহল।
সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায়, কলারোয়া পৌরসভার অভ্যন্তরের ভেতর দিয়ে ট্রাক্টরে করে মাটি বহন করা হচ্ছে। কলারোয়া পৌর বিএনপির বিএনপির সভাপতি(ভারপ্রাপ্ত) কামরুল ইসলাম, সেক্রেটারী তুহিন ও বিএনপি নেতা আব্দুল মাজেদ ট্রাক্টরের মাধ্যমে বিভিন্ন ভাটায় মাটি বহন করছেন। ট্রাক্টরের চলাচলের কারণে রাস্তাগুলো চলাচলের অযোগ্য হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে কলারোয়া পৌর সভার ৯ওয়ার্ড কাউন্সিলর আকিমুদ্দীনের বাড়ির সামনে কলারোয়া-খোরদো রাস্তার কালভার্টটি ভেঙ্গে গেছে। চলাচলের অযোগ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে ওই সড়কটি।
স্থানীয় গৃহিনী সুফিয়া বেগম বলেন, কৃষির উন্নয়নে এসব ট্রাক্টর আমদানি করা হলেও মালিকরা এগুলো ব্যবহার করছে ভাটার মাটি, ইট, বালু ইত্যাদি মালামাল পরিবহনের কাজে। কয়েকমাস যাবৎ পৌরসভার অভ্যন্তরেও দেখা যাচ্ছে এটি। সনদবিহীন চালকেরা বিশালাকৃতির চাকাওয়ালা ট্রাক্টরগুলো বেপরোয়াভাবে চালাচ্ছে ফলে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা-ঘাট ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। তবে এ ব্যাপারে কোন মাথা ব্যাথা নেই সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের।
৯ নং ওয়ার্ড কমিনার আকিমউদ্দীন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি বার বার পৌর সভায় বার বার আলোচনা করেছি। তারপরও এগুলো বন্ধ হচ্ছে না। আমরা বিষয়টি নিয়ে আমরা খুবই ঝামেলাই আছি। লাভবান হচ্ছে কয়েকজন আর ভোগান্তিতে পৌরসভার জনগন।
কলারোয়া গার্লস পাইলট স্কুলের অভিবাবক আমেনা খাতুন বলেন, চাকাওয়ালা এই গাড়ি চলাচলের কারনে আমরা বাচ্চাদের একা একা ছাড়তে পারি না। আমরা রাস্তায় চালাচল করতে পরছিনা। এগুলো দ্রুত বন্ধের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আওয়ামীলীগ নেতা বলেন, পৌরসভায় ট্রাক্টর কোন দিনও বন্ধ হবে না। কারণ হিসেবে জানতে চাইলে তারা বলেন, পৌর মেয়র বিএনপি নেতা, তার ছত্রছায়ায় বিএনপি নেতারা এগুলো চালাচ্ছে । প্রত্যেক মাসে থানা নিচ্ছে ৫০০ টাকা করে। একশো এর উপরে ট্রাক্টর চলছে। থানা টাকা পাচ্ছে, ইউএনও টাকা পাচ্ছে। প্রতিমাসে একটা বৃহৎ অংকের টাকা পকেটে গেলে এগুলো তারা বন্ধ করবে কেন?
কলারোয়া পৌর মেয়র আক্তারুজ্জামান বলেন, কাউন্সিলরদের সাথে আমরা বিষয়টি নিয়ে আমরা বারবার কথা বলেছি। স্থানীয়দের সাথে নিয়ে আমি তাদেরকে কে ওগুলো বন্ধ করে দেওয়ার কথা বলেছি।
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার নাথ বলেন, ইউএনও কে নিয়ে আমরা বারবার ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে জরিমানা আদায় করেছি। পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য আমরা তৎপর রয়েছি।
তবে টাকা নেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করে বলেন, টাকা নেওয়ার বিষয়টি সত্য নয়। এটি যারা বলছে তাদের স্বার্থে আঘাত লাগছে তাই তারা এগুলো রটাচ্ছে।
এসকল অবৈধ ট্রাক্টর/ট্রলি এবং তাদের চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে জানিয়ে সাতক্ষীরা বিআরটি এর সহকারি পরিচালক তানভীর আহম্মেদ বলেন, ট্রাক্টর ও ট্রলি দুটোই অবৈধ। আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে কথা বলে এগুলোর ব্যাপারে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোঃ ইফতেখার হোসেন বলেন, কলারোয়া ইউএনও এর সাথে কথা বলে অবৈধভাবে চলাচলকারী যানবাহনের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)