কলারোয়ায় অসহায় মেধাবী ছাত্র রাসেলের চিকিৎসায় হাত পেতেছেন বন্ধু শাওনসহ অন্যরা

কলারোয়া প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরার কলারোয়ার তুলসীডাঙ্গা গ্রামের রাসেল আলম। কলারোয়া মডেল হাইস্কুল থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে সে। বাণিজ্য বিভাগের এই মেধাবী ছাত্র ভালো ফলাফল করবে বলে আশা করছে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, সময়ের ব্যবধানে ধীরে ধীরে সে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলছে। ডান চোখে সে এখন আর তেমন দেখতে পাচ্ছেনা। রাসেলের পিতা নাসির হোসেন একজন দিনমজুর। ছেলের এই দুরবস্থায় চিকিৎসা খরচ চালিয়ে যাওয়ার মতো সাধ্য নেই তার।
সবকিছু জেনে বুঝে মেধাবী ওই শিক্ষার্থীর জন্য এগিয়ে আসে তার বন্ধুরা। রাসেল স্বপ্ন দেখতে শুরু করে আবার দুচোখ ভরে প্রকৃতি দেখার, স্বপ্ন দেখে পড়া-লেখা করে বড় হবার। বন্ধুরা এগিয়ে যায় সহপাঠী, ছোট-বড় শিক্ষার্থী, সমাজের বিত্তবান মানুষের কাছে, সাড়াও পায় অসম্ভব। সেই সাথে যুক্ত হন কলারোয়ার মানবতার মূর্ত প্রতীক গরীব অসহায়ের বন্ধু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আবদুল হামিদ। তাঁর দিকনির্দেশনায় নতুন মাত্রা খুঁজে পায় রাসেলের সাহায্যে এগিয়ে আসা বন্ধুরা। শিক্ষা অফিসারের আহ্বানে সাড়া দেয় উপজেলার সকল স্কুল-কলেজ ও মাদরাসার প্রধানগণ। সবাই মিলে চলছে চেষ্টা, টার্গেট রাসেলের প্রয়োজনীয় ৩ লক্ষ টাকা। যার ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার দুপুরে কলারোয়া গার্লস পাইলট হাইস্কুল, কয়লা হাইস্কুল ও বামনখালি হাইস্কুল থেকে সংগৃহীত ৬ হাজার ২শত টাকা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের হাতে তুলে দেয় বন্ধু শাওনসহ অন্যরা। এসময় উপস্থিত ছিলেন কলারোয়া বেত্রবতী হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সাংবাদিক রাশেদুল হাসান কামরুল, শিক্ষা অফিসের হিসাব রক্ষক শেখ জাহিদ হাসান। এর আগে সকালে উপজেলার সোনাবাড়িয়ার সোনার বাংলা কলেজের পক্ষ থেকে ২ হাজার টাকা শিক্ষা অফিসে জমা দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। উল্লেখ্য, রাসেলের শিক্ষা সহায়তা বাবদ উত্তোলিত অর্থ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে ওই ছাত্রের বাবার ব্যাংক একাউন্টে জমা রাখা হয়।
এদিকে, বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা জানিয়েছেন রাসেলের ডান চোখে রেটিনার সমস্যা। যা অপারেশন করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। আর এর জন্য খরচ পড়বে ৩ লাখ টাকার মতো। এই বড় অঙ্কের টাকা যোগাড়ের কোনো মাধ্যম নেই দরিদ্র পিতার । তাই টাকা যোগাড় হচ্ছে না বলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা চালাতে পারছেনা।
রাসেলের মা চায়না বেগম জানান, ছেলে যে ডান চোখে কম দেখতে পাচ্ছে তা তারা আগে বুঝতে পারেননি। এটি জানা গেছে, এসএসসি পরীক্ষা চলাকালীন। পরীক্ষার পর ডাক্তার দেখানোয় তারা নিশ্চিত হয়েছেন ডান চোখের সমস্যার ব্যাপারে। সমাজের দানশীল ও বিত্তবান মানুষ তাঁর ছেলের চিকিৎসার জন্য সহানুভূতির হাত বাড়িয়ে দেবেন-এমন আশা করছেন মা চায়না বেগম।
কেননা, জরুরী-ভিত্তিতে অপারেশন করা না গেলে পুরোপুরি ডান চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলবে রাসেল। সেই সাথে বাম চোখও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মানুষের সহায়তা ছাড়া রাসেলকে সুস্থ করে তোলা যাবেনা-এটি এক রকম নিশ্চিত করেই বলা যায়। আমরা কী পারি না মেধাবী এই এসএসসি পরীক্ষার্থীর পাশে দাঁড়াতে। ফিরিয়ে দিতে পারি না তার আগুয়ান সম্ভাবনাময় শিক্ষাজীবন। পরিবারের পক্ষ থেকে রাসেলের চিকিৎসা সহায়তা গ্রহণের জন্য ইসলামী ব্যাংক, কলারোয়া শাখায় একটি হিসাব নং (৮৬৩) খোলা হয়েছে। এছাড়া পরিবারের সাথে যোগাযোগের জন্য একটি সেল ফোন নাম্বার (০১৮৮৪-৪৩৩৩০০) দেওয়া হয়েছে।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)