কলারোয়ার পানিকাউরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা জামশেদ আলীর ইন্তেকাল
কলারোয়া উপজেলার পানিকাউরিয়া গ্রামের অধিবাসী পানিকাউরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মোঃ জামশেদ আলী মঙ্গলবার দুপুর ২ টায় যশোরে তার বর্তমান বাসভবনে বার্ধক্যজনিত কারনে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না এলাইহি রাজিউন)।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৩ ছেলে ও ৬ মেয়ে সহ অসংখ্য আত্মীয় স্বজন রেখে যান।
শিক্ষানুরাগী এ ব্যক্তি ভারতের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার, গায়ঘাটা থানার, রাজাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তিনি বাংলাদেশে এসে গ্রামের উন্নয়নের জন্য অনেক পরিশ্রম করে ১৯৬৬ ইং সালে পানিকাউরিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন করেন। সে সময়ে গ্রামে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিলো না। গ্রামের ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা লাভের জন্য পায়ে হেঁটে যেতে হত কলারোয়া পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে। গ্রামের ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই একই গ্রামের মোকছেদ আলী গাজী, মাদার মোড়ল, মধু কাদের, ইছাক ঢালী, ইব্রাহীম দালাল, হরিপদ মিস্ত্রি, খলশী গ্রামের মোকছেদ ডাক্তার, শাকদাহ গ্রামের মোকছেদ আলী খান, লক্ষ্মীখোলা গ্রামের ইমান আলী মুফতি, ছলিমপুর গ্রামের শওকত আলীসহ এলাকার বিভিন্ন বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তিদের নিয়ে বাঁশ, কাঠ, টালী ও চাচের বেড়া দিয়ে ১৯৬৮ ইং সালে গড়ে তোলেন পানিকাউরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়। সে সময়ে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষার মান তেমন ভাল ছিলো না। তিনি বিদ্যালয়ের কোন পদে না থেকেও শেষ জীবন পর্যন্ত বিদ্যালয়ের সার্বিক মান উন্নয়ন করতে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যান।
অকপটে স্বীকার করতেই হয় তারই প্রচেষ্টায় আজ পানিকাউরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৫ শতাধিক এবং পাসের হার প্রায় শতভাগ। সেই গুণীজনের মৃত্যুতে পানিকাউরিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মমিনুর রহমান, সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত কুমার দে, সিনিয়র শিক্ষক শামসুর রহমান, মোঃ রবিউল ইসলাম, মোছাঃ আফরোজা খাতুন, শ্রী মিলন কুমার, মোঃ আলমগীর কবীর, এস.এম. সাইফুল ইসলাম, মোঃ হুসাইন কবীর, মোঃ হাসানুজ্জামান, মোঃ আব্দুস সালাম, মোঃ খালেদুজ্জামান, মোঃ আমিরুল ইসলাম, মোঃ মফিজুল ইসলাম, মোঃ রাজু আহম্মেদ, মোঃ জামাল হোসেনসহ এলাকাবাসী গভীরভাবে শোকাহত।
সদ্য প্রয়াত জামশেদ আলী এ গ্রামে একটি ডাকঘরও প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি অনেক গল্প, কবিতা ও ছোট ছোট বই লিখেছেন। তাঁর আত্নার মাগফেরাত কামনা করে অত্র বিদ্যালয়ে সকল শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে দোয়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। দোয় পরিচালনা করেন বিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষক মাওলানা মোঃ আব্দুস সালাম।