আশাশুনি সাব-রেজিস্ট্রারের চরম স্বেচ্ছারিতায় বিড়ম্বনার শিকার সাধারণ মানুষ!

সাব-রেজিস্টারের চরম স্বেচ্ছাচারিতার কারণে বিড়ম্বনার শিকার আশাশুনি উপজেলার সাধারণ মানুষ। প্রায় দু’বছর অতিবাহিত হলেও আটকে গেছে ৪৫৭ খানা মূল দলিল। এ কারণে মোটা অংকের রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। সাধারণ মানুষের মুখে মুখে একটাই প্রশ্ন দেখার কি কেউ নেই ? বিশেষ সূত্রে জানা গেছে, আশাশুনি উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গত ২০১৬ সনে ৪৫১৫ খানা দলিল রেজিস্ট্রি হয়। নিয়মানুসারে এসব দলিল অফিসের ভলিউম বইতে লিপিবদ্ধ করার পর ধারাবাহিকভাবে গ্রহীতাদের নিকট ফেরত প্রদান করার কথা থাকলেও ৩৬০১ নং থেকে ৪০৫৮ নং পর্যন্ত মোট ৪৫৭ খানা দলিল অসম্পূর্ণ থাকায় সেগুলো জনসাধারণ ফেরত পাচ্ছেন না। কারণ দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত সাব-রেজিস্টার দুলাল কুমার চৌধুরীর ব্যাপক স্বোচাচারিতা, কর্মরত থাকাবস্থায় অনিয়মিত অফিস করা, স্বল্প সময় অফিসে অবস্থানের কারণে দলিলে স্বাক্ষর না করা ইত্যাদি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন অফিস সহকারী এই প্রতিবেদককে জানান, দুলাল স্যার স্টেশনে থাকাকালীন সময় অফিস স্টাফদের পক্ষ থেকে দলিলে সই করার জন্য বারবার বলা হলেও তিনিতো তা করেন নি বরং আমাদেরকে মাঝে মধ্যে সাসপেন্ড করার হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি বলতেন আমার ইচ্ছা হলেই আমি সই করবো। আর দলিলে সই না করে চলে যাওয়ার পর আমাদের অফিসকে নতুন করে আরেক বিপদে ফেলে দিয়ে গেছেন। এদিকে দলিল সময় মত ডেলিভারি না হওয়ার কারণে গ্রাহকরা যেমন হয়রানীর শিকার তেমনি সরকার হারাচ্ছে মোটা অংকের রাজস্ব। এসব দলিলগুলো ডেলিভারি হলে, নামপত্তন, নতুনভাবে হস্তান্তর, নতুন সনের খাজনা কর্তন, ব্যাংকিং লেনদেনসহ নানা খাতে সরকারের বাড়তি আয়ের একটি সুগম হত। কিন্তু তাও এখন স্থবির হয়ে আছে। মাহবুব হোসেন নামের এক গ্রহীতা অভিযোগ করে বলেন, দলিল ডেলিভারি পেলে আমি নাম পত্তন করে জমি বিক্রয় করেবো। কিন্তু দলিল ডেলিভারি না পাওয়ার কারণে আমার পক্ষে নামপত্তনও হচ্ছেনা, বিক্রিও করা সম্ভব হচ্ছেনা। কার্ত্তিক মন্ডল নামের আরেক ভুক্তভুগি বলেন, আমি দলিল ডেলিভারি নিয়ে নামপত্তন করে ব্যাংক লোন নেব। কিন্তু ডেলিভারি না পাওয়ার কারণে আমি মারাত্মকভাবে বিপাকে পড়ে আছি। অফিসে যোগাযোগ করেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অফিসে তো নিয়মিত ধর্না দিচ্ছি, আমার অনেক পরের সিরিয়ালের দলিল ডেলিভারি হয়ে গেছে, আমার দলিলে নাকি সাব-রেজিস্টার সই করেনি। তাই আমাকে দলিল দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। প্রসঙ্গত: ২০১৭ সালে ৭ আগস্ট উক্ত সাব-রেজিস্টার দুলাল কুমার চৌধুরী, ২৩৫৯/২০১৭ নং হেবাবিল এওয়াজ নামা দলিলের দাতা-গ্রহীতার সঙ্গে যোগসাজসী করে জাল চেক ব্যবহার করে সরকারি সম্পত্তি ব্যক্তি মালিকানায় রেজিস্ট্রির মাধ্যমে হস্তান্তর করে দেন। এর প্রেক্ষিতে চলতি বছরের ২ এপ্রিল তাকে শাস্তিমূলক বদলী করা হয়। কিন্তু ২ এপ্রিলের পর থেকে অদ্যাবধি তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসের পক্ষ থেকে বহুবার জনভোগান্তির বিষয়টি জানানো হলেও তিনি একদিনের জন্য আসেননি বলেও জানা গেছে। এ বিষয়ে অফিস থেকে প্রাপ্ত নাম্বারে সাব-রেজিস্ট্রার দুলাল কুমার চৌধুরীর সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও মোবাইল বন্ধ থাকায় সম্ভব হয়নি। অপরদিকে অফিস সহকারী (বড় বাবু) প্রশান্ত হালদারের সাথে আলাপকালে স্বাক্ষর না হওয়ার কারণে দলিল ডেলিভারি দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা বলে তিনি জানান।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)