আশাশুনির গোয়ালডাঙ্গা দাখিল মাদরাসার ক্লাশ চলছে জীর্ণশীর্ণ ভবনে

জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি :
আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নের জেডিকেএফ শুক্কলিয়া দাখিল মাদরাসার ক্লাশ পরিচালিত হচ্ছে চরম জরাজীর্ণ গৃহের মধ্যে। দীর্ঘকালেও মাদরাসা গৃহের সংস্কার কাজ না হওয়ায় মাদরাসা গৃহ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এপর্যন্ত মাদরাসাটি ঘর নির্মাণ বা সংস্কারের জন্য কোন সরকারি সহায়তা পায়নি। এব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।
মাদরাসাটি স্থাপিত হয় ১৯৮৪ সালে। মাদরাসা চালুর অনুমতি পায় ১৯৮৭ সালে। ১৯৯৪ সালে স্বীকৃতি প্রাপ্ত হয়। প্রথম থেকে এলাকাবাসী ও শিক্ষকদের ব্যক্তিগত সহায়তায় মাদরাসায় ইটের দেওয়ালের উপর টিনের ছাউনি দিয়ে ৫ কক্ষ বিশিষ্ট ঘর নির্মাণ করে চলে আসছিল। ১৯৮৮ সালে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে মাদরাসা বিধ্বস্ত হলে আবার নিজেরাই সংস্কার করান। ৪৬৫ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে ১৪ জন শিক্ষক ও ৩ জন কর্মচারী অতিকষ্টে ক্লাস চালাচ্ছিলেন। কিন্তু ক্লাস রুমের অভাব চরম আকার ধারণ করায় শিক্ষক-কর্মচারীরা নিজেদের অর্থ দিয়ে ৩ কক্ষ বিশিষ্ট টিনের ছাউনির আরেকটি ঘর নির্মাণ করেন। তাতেও ক্লাসের সংকুলান না হওয়ায় ২০১০ সালে শিক্ষক ও এলাকাবাসী ২ কক্ষ বিশিষ্ট আরো একটি ঘর নির্মাণ করেন। যার একটি কক্ষ ধ্বসে পড়ে যায় এবং পুরাতন ৫ কক্ষ বিশিষ্ট ঘরটি চরম জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। বর্তমানে বর্ষা মৌসুমে কক্ষগুলো বৃষ্টির পানিতে একাকার হয়ে যায়। দেওয়াল খসে খসে পড়ছে। ইট বিছানো মেঝে ব্যবহার অনুপযোগী হতে চলেছে। ছাউনির টিনগুলো মরিচা পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে ঘরের বারান্দায় এবং কখনো কখনো গাছ তলায় ক্লাস নিতে হচ্ছে। দুঃখের বিষয় অদ্যাবধি মাদরাসাটি ঘর সংস্কার বা ঘর নির্মাণের জন্য কোন সরকারি সহায়তা পায়নি। আশপাশের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলগুলো সরকারি সহায়তায় যেখানে চাকচিক্যময় পরিবেশের সৃষ্টি করেছে, সেখানে মাদরাসার অবস্থা খুবই বেমানান হয়ে উঠেছে।
সেই পুরনো আমলের ঘরগুলো এখন রাস্তার অনেক নীচে অবস্থান করছে। ভীতের উচ্চতা খুবই কম। এছাড়া মাদরাসার মাঠ বর্ষাকালে সম্পূর্ণ ভাবে পানিতে নিমজ্জিত থাকে। এতগুলো ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পৃথক কোন ল্যাট্রিন নেই। তাদের জন্য মাত্র একটি ল্যাট্রিন রয়েছে। শিক্ষকদের জন্যও একটি ল্যাট্রিন। ল্যৗাট্রিনগুলোও ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে গেছে। দু’টি টিউবওয়েলের একটি অকেঁজো। অন্যটি আর্সেনিকযুক্ত পানির কারণে সুপেয় পানির অভাব চরম আকার ধারণ করেছে। এতকিছুর পরও মাদরাসার সার্বিক রেজাল্ট খুবই ভাল। এলাকার মানুষের কাছে খুবই প্রিয় ও কাঙ্ক্ষিত প্রতিষ্ঠানটির উন্নয়নে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও জন প্রতিনিধিদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকার বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তি ও অভিভাবকবৃন্দ।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)