আশাশুনিতে ভেজাল শিশু খাদ্যে বাজার সয়লাব

সচ্চিদানন্দদেসদয়:
আশাশুনির প্রত্যন্ত অঞ্চলে ভেজাল, রং মিশ্রিত, মেয়াদোত্তীর্ণ শিশু খাদ্য বিক্রি হচ্ছে। এসব ভেজাল শিশু খাদ্যে ফরমালিন,ট্যালকম পাউডার,পাঁচা তেঁতুল,পাঁচা আম,আমড়া ও ঘন চিনি দিয়ে তৈরি করা বিভিন্ন প্রকারের জুস,পাইপ চুইংগাম,আচার,রকমারি চিপস,বিস্কুট,শনপাপড়ি,কেক,লোভনীয় চকলেট বাজার এখন সয়লাব। রকমারী নামিদামী কোম্পানির নাম ব্যবহার করে স্থানীয়ভাবে তৈরি ভেজাল এসব শিশু খাদ্য খেয়ে পেটের পীড়াসহ নানা রকম জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। দ্রুত এসব ভেজাল শিশু খাদ্যের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান সহ কার্যকর ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছে সচেতন মহল।
বাজারে লিচু ড্রিংক, ফুট ড্রিংক, স্ট্রবেরি, জাম, আম স্বাদের রকমারী চকোলেট, ফুলক্রিম দুধ, বাহারী জুস, চিপসসহ অনন্ত ৫০ ধরনের ভেজাল, শরীরের জন্য ক্ষতিকর রং মিশ্রিত শিশু খাদ্য বিক্রি হচ্ছে। ১ থেকে ২৫ টাকা মূল্যের শিশুদের মন কাড়ানো এসব শিশু খাদ্য সহজলভ্য হওয়ায় এর চাহিদাও অনেক বেশি, কিন্তু ভেজাল এসব শিশু খাদ্য খেয়ে পেটের পীড়া, অপুষ্টি, কৃমিসহ জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে  কম বয়সী শিশুরা। এর মধ্যে আবার গ্রামাঞ্চলের শিশুদের সংখ্যা বেশি। আবার এসব ভেজাল পণ্য বিক্রেতাদেরও বেশি টার্গেট থাকে গ্রামাঞ্চলের স্কুল গুলোর  দিকে।
আলাপকালে স্থানীয় এক  ব্যবসায়ী বলেন কম দামের জিনিসের ৯০ ভাগ গ্রাহক হচ্ছে শিশুরা। তাই তাদের আকর্ষণ করতে রং মিশ্রিত করে সামান্য সেকেরান দিয়ে মিষ্টি করে অনেক ধরনের জিনিস বাজারজাত করা হচ্ছে। তারা নিজেরাও স্বীকার করে এর মধ্যে ৯৫ ভাগ জিনিসই দুই নাম্বার বা ভেজাল,  লিচিতে সামান্য ফ্লেভার দিয়ে বাকি সব পানি। পাউডার দুধ বলে সব পাউডার, জেলীতে সব কৃত্রিম জিনিস, চকোলেটের অবস্থা আরো খারাপ। জুস ও চিপসতো ডাক্তাররা প্রতিনিয়ত বারণ করেন। তবে কি করবো ব্যবসার কারণে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে গ্রামাঞ্চলে এসব পণ্য বেশি বিক্রি হয় বলেও জানান তারা। আগড়দাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স,ম আলাউদ্দীন  বলেন, গ্রামের প্রতিটি দোকান এসব ভেজাল বাহারী পণ্য খুব সুন্দরভাবে প্রদর্শনী করে। আর দামেও সস্তা হওয়ায় গ্রামের শিশুরা এসব পণ্য বেশি খায়। এজন্য তাদের ডায়রিয়াসহ নানা জটিল রোগ সবসময় লেগে থাকে। এজন্য তিনি অভিভাবকদের বেশি সচেতন হতে পরামর্শ দেন। নাস্তার সময় শিশুদের কলা বিস্কিট, , ডিম এসব খাওয়ানোর পরামর্শ দেন।
তিনি আরও বলেন,অনেকে আদর করে বাচ্চাদের হাতে টাকা দেয় সেটা না দিয়ে তাদের টিফিন দিতেও অভ্যস্ত হতে আহবান জানান। প্রথমত শিশুখাদ্য ভেজাল বিক্রি যারা করে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা। সর্বোপরি অভিভাবকদের বেশি সচেতন হতে হবে শিশু দোকানের সেইসব খাবারের প্রতি আসক্তি কমাতে হবে। আর নিয়মিত ডিম, কলা, দুধ, বিস্কিট, আটার তৈরি রুটি খেতে অভ্যস্ত করতে হবে।
এ ব্যাপারে আলাপকালে আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য কমর্কতা অরুণ ব্যানার্জী বলেন, বাজারের চিপস, জুস, রং মিশ্রিত রকমারী খাবার শিশুর মুখের অরুচি তৈরি করে। যার ফলে শিশু আর স্বাভাবিক খাদ্য খেতে চায় না। এতে যে বয়সে যত ওজন বাড়ার কথা তত বাড়ে না। শিশু অপুষ্টি রোগাক্রান্ত থাকে। মোটকথা বাজারের এসব রং মিশ্রিত ক্ষতিকারক খাবার শিশুর জন্য খুবই ক্ষতিকারক।
Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)