আধুনিক যুগেও বর্ষা মৌসুমে তালার হাজার ও মানুষের চলাচলের মাধ্যম নৌকা

বর্ষা মৌসুমে নৌকাই যেখানে চলাচলের একমাত্র ভরসা। আধুনিকতার এই যুগে শুনতে অবাক লাগলেও তালার খেশরা ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষকে বর্ষা মৌসুমে নৌকা চড়ে যাতায়াত করতে হয়। ইটের বা পাকা রাস্তার অভাবে শাহপুর-কলাগাছি গ্রাম থেকে সাতক্ষীরা জেলা সদরসহ দক্ষিণে বুধহাটা, পশ্চিমে দলুয়া, পাটকেলঘাটা ও ইসলামকাটিতে যাতায়াত করার একমাত্র মাধ্যম নৌকা বা ট্রলার।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বর্ষাকাল আসলে যেন অন্য জগতের বাসিন্দা হয়ে যায় ইউনিয়নের দরমুড়াগাছা, কলাগাছি, কুলপোতা ,রাজাপুর, শাহপুরসহ অনেক গ্রাামের মানুষ। ইটের বা পাকা রাস্তার অভাবে বিভিন্ন বাজারে, মোকামে বা বিভিন্ন সেবা কেন্দ্রে গিয়ে দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে অক্ষম তারা, ফলে বাধ্য হয়ে নৌকা বা ট্রলারের মাধ্যমে পানি পথে চলাচল করতে হয় তাদের। ইটের বা পাকা রাস্তার অভাবে শাহপুর গ্রাাম থেকে সাতক্ষীরা জেলা সদরসহ দক্ষিণে বুধহাটা, মশককাটি, পশ্চিমে দলুয়া, পাটকেলঘাটা ও ইসলামকাটিতে যাতায়াত বা প্রয়োজনীয় মালামাল আনা-নেওয়ার জন্য জনসাধারণকে নৌকা বা ট্রলারের স্মরণাপন্ন হতে হয়।

জানা গেছে, ইউনিয়নের শাহপুর থেকে মষিয়াডাঙ্গা পর্যন্ত সাড়ে ৩ কিলোমিটার ও কলাগাছি থেকে শালিখা বাজার পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার রাস্তা কাঁচা হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে হাটু কাদা জমে। এতে এসব রাস্তা দিয়ে হেটে বা যানবাহন নিয়ে চলাচলের কোন সুযোগ না থাকায় মানুষ নৌকায় চড়তে বাধ্য হয়।

শাহপুর গ্রামের আশরাফ মোড়ল  জানান, বর্ষাকালে সাতক্ষীরায় যেতে হলে ট্রলার ছাড়া যাওয়ার কোন উপায় নেই। আমাদের গ্রামটি যেন বর্ষা মৌসুমে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। তখন আমাদের চলাচলের একমাত্র ভরসা নৌকা। এতে যেমন ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয় তেমন সময়ও নষ্ট হয়। অথচ আমদের এই দুর্ভোগ দেখার কেউ নেই।

পলাশ গোলদার নামের একজন সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী জানান, বুধহাটা থেকে দোকানের মাল আনতে গেলে ট্রলারেই আনতে হয়। কলাগাছি ও দরমুড়াগাছা গ্রামের অবস্থা আরো বেশি খারাপ। বর্ষা মৌসুমে বাড়ি থেকে বের হতে গেলে নৌকার কোন বিকল্প নেই। আর নৌকা পথে মালামাল আনতে ঝুঁকি থাকে।

কলাগাছি গ্রামের সুজন কুমার  জানান, বর্ষাকালে কলাগাছি ও দরমুড়াগাছা গ্রামের অবস্থা সাগরের মাঝে দ্বীপের মত হয়। সভ্য জগতের সাথে যোগাযোগ করতে হলে নৌকাই একমাত্র মাধ্যম। এই আধুনিক বাংলাদেশে আশপাশের ইউনিয়নগুলোতে যে পরিমান উন্নয়ন হচ্ছে সেই তুলনায় খেশরা ইউনিয়নের রাস্তাঘাট সংস্কার বা পাকা হচ্ছে না। এই দুর্ভোগ থেকে আমরা অবসান চাই।

খেশরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাজীব হোসেন রাজ বলেন, ভৌগলিক কারণে খেশরার গ্রামগুলো নিচু ও বর্ষায় পানি জমে যায়। তবে জনগণের কথা ভেবে খুব দ্রুত এই এলাকার রাস্তাগুলোর উন্নয়ন করা হবে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)