আতঙ্কের নাম ‘সাজিম বাহিনী’

দিনে দিনে ভয়ংকর হয়ে উঠছে কক্সবাজারের কলাতলীর সাজিম বাহিনী। চাঁদাবাজি, ভূমি দখল, চাঁদার দাবিতে রাস্তা বন্ধ করে দেয়া, ভবণ নির্মাণে বাধা, ছিনতাই, অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, ইয়াবা সেবন ও বিকিকিনি এবং মোটরসাইকেল চুরিতে সিদ্ধহস্ত ওই বাহিনী। অপরাধের প্রতিটি অলিগলিতেই তাদের অবাধ বিচরণ।

ফলে এ বাহিনীর ভয়ে তটস্থ কক্সবাজার পৌরসভার কলাতলীর সৈকতপাড়ার বাসিন্দাসহ পর্যটন জোনের ব্যবসায়ীরা। আর এ বাহিনীর প্রধান হলেন নকল টাকার কারবারী জমিরুল কাদের ও অনৈতিক কর্মের রাণী হিসেবে পরিচিত জোবাইদা ইয়াসমিনের একমাত্র ছেলে নোমানুল হক সাজিম ওরফে সাগর।

সৈকতপাড়ার ত্রাস হিসেবে পরিচিত সাজিম বাহিনীর রয়েছে দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্র। এলাকার লোকজনের দাবি- সাজিম বাহিনী শহরের কলাতলী রোডের সৈকতপাড়ার কটেজ জোনকে অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ক্ষমতাসীন দলের নাম ব্যবহার করে সাজিম ও তার পরিবার একের পর এক অপরাধ করে পার পেয়ে যাচ্ছে। মাদকসহ হাতেনাতে আটক হওয়ার পরও অদৃশ্য ক্ষমতার বলে সাজিম বারবার পুলিশের হাত থেকে ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে।

সূত্রটি আরও জানায়, সৈকতপাড়ায় সাজিমের একটি রিসোর্টি রয়েছে। সেখানে নিয়মিত ইয়াবা ও জুয়ার আসর বসে। চলে অনৈতিক কর্মকাণ্ড। এ কারণে ঘন ঘন রিসোর্টির নামও পরিবর্তন করে সাজিম। বর্তমানে ওই রিসোর্টের নাম ‘রাজভীর’।

এ বিষয়ে সৈকত পাড়ার আমিন নামে এক বাসিন্দা বলেন, সাজিম ও তার বাহিনীর ভয়ে সবসময় তটস্থ থাকি। কিছুদিন আগে এ বাহিনী সৈকতপাড়ার ফরেস্ট অফিসের পাশের রাস্তাটি কাটা ও কলাগাছ দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। আর রাস্তা খোলার জন্য ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় সমাজ কমিটির কাছে অভিযোগও করা হয়েছে। কিন্তু এখনও সুরাহা মিলেনি।

এ বিষয়ে কক্সবাজার সদর থানার ওসি (তদন্ত) কামরুল আজম বলেন, দুই মাস জেল খাটার পর কিছুদিন আগে বের হয়েছে সাজিমের বাবা জমিরুল। তার বিরুদ্ধে মারধর, ভূমি দখল, চুরি এবং সরকারি কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে সদর থানায় আরও তিনটি মামলা রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সাজিমের মা ইয়াসমিনের বিরুদ্ধেও একই অভিযোগের পাশাপাশি খুনের হুমকি, পাহাড় দখল এবং অনৈতিক কর্ম নিয়ন্ত্রণের অভিযোগে পাঁচটি মামলা রয়েছে।

ওসি কামরুল আজম বলেন, সাজিমের বিরুদ্ধেও চাঁদাবাজি, চুরি, চোরাইকৃত মালামাল উদ্ধার, জমি ও পাহাড় দখল এবং সরকারি কাজে বাধা এবং সরকারি কর্মকর্তাকে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগে ছয়টি মামলা রয়েছে।

এদিকে গোয়েন্দা সূত্র জানায়, বার্মাইয়া ও পাহাড়ে অবস্থানকারী প্রায় ৫০ জন যুবকের একটি বাহিনী রয়েছে সাজিমের। এই বাহিনী দিয়ে কলাতলী রোড়ের পর্যটন জোনে ছিনতাই, মোটরসাইকেল চুরি, চাঁদাবাজি, ভূমি দস্যুতা, পাহাড় দখল করে সাজিম। এছাড়া তার রয়েছে রিকশাচালক, হোটেল বয়সহ এলাকার বখাটে ছেলের একটি দল। যাদের দিয়ে তিনি ইয়াবা চোরাচালান ও জুয়ার আসর বসান।

এ বিষয়ে সাজিমের মুঠোফোনে কয়েক দফা ফোন করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফরাজুল হক টুটুল বলেন, সাজিমকে গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)