৭০ বছরে আওয়ামী লীগ

উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, শামসুল হক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে তৎকালীন আওয়ামী মুসলিম লীগ তথা আজকের আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়।

গত এই ৭০ বছরে বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে দলটির যথেষ্ট অর্জন রয়েছে।

১৯৪৮ সালে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষার দাবিতে সূচিত ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে আইয়ুববিরোধী আন্দোলন, ৬২ ও ৬৪-এর শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬-এর ঐতিহাসিক ৬-দফা আন্দোলন, ৬৮-এর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান, ৬-দফাভিত্তিক৭০-এর নির্বাচনে ঐতিহাসিক বিজয় ও ৭১-এ সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাঙালির হাজার বছরের স্বাধীনতার স্বপ্ন-আকাক্সক্ষা পরিপূর্ণতা লাভ করে আওয়ামী লীগের হাত ধরে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা এবং ৩ নভেম্বর কারাগারের অভ্যন্তরে চার জাতীয় নেতাকে হত্যার পর সামরিক শাসনের নির্যাতন আর নিপীড়নের মধ্যে পড়ে ঐতিহ্যবাহী দলটি।

নেতাদের মধ্যেও দেখা দেয় বিভেদ। ১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দলীয় সভাপতি হিসেবে দেশে ফিরে কয়েক ভাগে বিভক্ত আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করেন। আন্দোলন শুরু করেন সামরিক শাসক এইচএম এরশাদের বিরুদ্ধে। ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে দলটির প্রধান শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জয়ী হয়ে ২৩ জুন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরে আসে। ২০০১ এবং ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারির পর আর এক দফা বিপর্যয় কাটিয়ে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে তিন-চতুর্থাংশ আসনে বিজয়ী হয়ে আবারো রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পায় এই দলটি। পরবর্তিতে ২০১৪ সালের ৫ জানুযারীর সাধারন নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসে টানা দুই মেয়াদে সরকার পরিচালনা করছে।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও রায় কার্যকর, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের রায় কার্যকর, নারীর ক্ষমতায়ন, পার্বত্য শান্তিচুক্তি, মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমার চুক্তি, ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময় ও স্থলসীমান্ত চুক্তি, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, উন্নয়নে গতিশীলতা, ডিজিটাল বাংলাদেশ, শিক্ষার প্রসার, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ, কর্মসংস্থান, বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, খাদ্য নিরাপত্তা, নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুগান্তকারী উন্নয়নের ফলে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হয়েছে।

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)