আশাশুনিতে মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে বন্ধ করা যাচ্ছে না কোচিং বাণিজ্য

সচ্চিদানন্দদেসদয়,আশাশুনিঃ
কোনোভাবেই যেন বন্ধ করা যাচ্ছে না কোচিং বাণিজ্য। স্কুল,কলেজের শিক্ষকরা ক্লাসে মনোযোগ না দিয়ে শিক্ষার্থীদের কোচিংয়ে যেতে বাধ্য করছেন। যেসব শিক্ষার্থী কোচিং করে না পরীক্ষায় তাদের নম্বর কমিয়ে দেওয়া হবে এমন ভাবে আতঙ্কিত করে তুলছে ছাত্র/ছাত্রীদের। সূত্রমতে,আশাশুনির প্রতিটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের এভাবে কোচিংয়ের ফাঁদে ফেলছেন শিক্ষকরা এবং মানসিক ভাবে ছাত্র/ছাত্রীদের নির্যাতন করে চলেছে।কিন্ত নেই কোন এর প্রতিকার। কোচিংবাজ শিক্ষকদের কাছে অসহায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষকদের কোচিং করাতে সহায়তা করছেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকরা। এর বিনিময়ে তাঁরা কোচিংবাজ শিক্ষকদের কাছ থেকে অনেক ক্ষেত্রে সুবিধা পাচ্ছেন।  আশাশুনির সদর সহ পাশাপাশি কোচিং বাণিজ্যের এ প্রবণতা ছড়িয়ে পড়েছে  প্রত্যন্ত অঞ্চলেও। গ্রামের স্কুল গুলোতে এখন প্রাইভেট টিউশন ও কোচিং বাণিজ্য জমজমাট। শিক্ষার্থীরা শুধু স্কুলে যাওয়া-আসা করে আর পরীক্ষা দেয়। পড়াশোনা করতে হয় প্রাইভেট আর কোচিংয়ে।
সূত্রমতে, ব্যাচভিত্তিক অ্যাকাডেমি কোচিং, মডেল টেস্টসহ বিভিন্ন স্টাইলে কোচিং করাচ্ছেন শিক্ষকরা। প্রশাসনের নজরে না পড়তে কোচিং সেন্টারের কোনও নাম ব্যবহার করা হচ্ছে না। । আশাশুনির প্রত্যেকটি বিদ্যালয়,কলেজ,মাদ্রাসা বা তৎসংলগ্ন  প্রায় সব স্কুলেই একটি কক্ষে ৫০ থেকে শুরু করে ৭০ জন পর্যন্ত শিক্ষার্থীর একসঙ্গে ক্লাস হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শিক্ষকদের কাজ শুধু পড়া দেওয়া এবং দু-চারজনকে তা ধরা। একটি বিষয়ে বিস্তারিতভাবে বুঝিয়ে বলা, দুর্বল শিক্ষার্থীদের বাড়তি যত্ন নেওয়া, কঠিন বিষয়ে বেশি সময় দেওয়ার রীতি কোনও স্কুলেই নেই ।এমন কি এ গুলো প্রধান শিক্ষিকাদের দেখার দায়িত্ব থাকলেও তারা এ বিষয়ে কোন খাঁজ খবর রাখেন না।। ক্লাসের সময় ৪৫ মিনিট। এর মধ্যে শিক্ষার্থীদের খুব সামান্য অংশই বোঝাতে ব্যয় করেন শিক্ষক/শিক্ষিকা। বোর্ডে দু-একটি অঙ্ক করে দেখানো, রিডিং পড়া ও বাড়ির কাজ দেওয়াতেই সময় চলে যায়। সরকার কোচিং বাণিজ্য বন্ধে  নীতিমালা প্রকাশ করেছে। সেখানে একজন শিক্ষককে তাঁর প্রতিষ্ঠানের বাইরে অন্য কোনও প্রতিষ্ঠানের ১০ জন শিক্ষার্থী পড়ানোর সুযোগ রাখা হয়েছে।এ ক্ষেত্রে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী অতিরিক্ত ক্লাস করানোর জন্য অভিভাবক রা আবেদন পত্র জমা দিবেন।অথচ এ আইন আশাশুনির কোন স্কুল কলেজে মানা হচ্ছে না।দেখা গেছে, ছাত্র/ছাত্রীদের সকাল ৬ টায় অতিরিক্ত প্রাইভেট পড়তে  হলে তাকে ভোর ৫ টায় ঘুম থেকে উঠে নিরাপত্তা হীনতার মধ্যে দিয়ে বাড়ি থেকে রওনা দিতে হয়।তার পরও স্কুল ও অতিরিক্ত ক্লাস করে বাড়ি ফিরতে ফিরতে তাদের আর বই নিয়ে বসার অপেক্ষা থাকছে না।অনেক ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান প্রধান,বিষয় ভিত্তিক ক্লাস রুটিন নির্ধারণ করার কথা। কিন্তু প্রভাবশালী শিক্ষিকা/শিক্ষকদের কথা অনুযায়ী প্রধান শিক্ষিক বিষয় ভিত্তিক টিচারদের বাদ দিয়ে অন্য টিচার দের দ্বারা ক্লাস নিচ্ছেন ।যেমন ধর্মীয় শিক্ষক নিচ্ছেন ইংরেজি ক্লাস,বাংলার টিচার নিচ্ছেন গণিত ক্লাস,এ ছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নির্ধারিত সময়ের আগে বা পরে শুধু অভিভাবকদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিষ্ঠান প্রধান অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করতে পারবেন। কিন্ত  এ  স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বা প্রধান শিক্ষকের  কোনও নজরদারি ব্যবস্থা নেই। যদিও  শিক্ষা আইনের খসড়ায় কোচিং বাণিজ্য বন্ধ নীতিমালা অনুসরণ না করলে,এমপিও বাতিল বা স্থগিত,বেতন ভাদাতি স্থগিত,বেতন স্কেল অবনতি করন,সাময়িক বরখাস্ত বা চূড়ান্ত ভাবে বরখাস্ত, একজন শিক্ষককে দুই লাখ টাকা অর্থদন্ড ও ছয় মাসের কারাদন্ড কিংবা অথবা উভয় দন্ডের বিধান রাখা হয়েছে।অপরদিকে কোন ম্যানেজিং কমিটি কোচিং ব্যানিজ্যে জড়িত টিচারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে পরিচালনা পর্ষদ ভেঙ্গে দেওয়া সহ  পাঠদানের অনুমতি,অধিভুক্তি বাতিল,স্বীকৃতি বাতিল করতে পারবে সরকার।কিন্তু আশাশুনির মাধ্যমিক স্কুল গুলোতে নেই কোন এ বিষয়ে তদারকির ব্যবস্থা।

 

Please follow and like us:
fb-share-icon
Tweet 20

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Social media & sharing icons powered by UltimatelySocial
error

Enjoy this blog? Please spread the word :)